শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

বাছিরকে গ্রেফতারে মাঠে দুদক

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি

আহমেদ আল আমীন

বিতর্কিত ডিআইজি মিজানুর রহমানের সঙ্গে ঘুষ লেনদেন মামলার আসামি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত দুদকের আলোচিত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে গ্রেফতারে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক টিম তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে। মঙ্গলবার বিকালে মামলার পর সেই রাতে শাহজাহানপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযানে গিয়েও তার নাগাল পায়নি দুদক। এ অবস্থায় ঘুষ লেনদেনের সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করে সঠিক তথ্য উদ্্ঘাটনে অভিযোগের স্বাধীন ও বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবিসহ গতকাল রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন এনামুল বাছির। বাছিরের আইনজীবী কামাল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অন্যদিকে দুদক সূত্র জানিয়েছে, মামলার তদন্তের প্রয়োজনে এখন বাছিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। তাই তাকে গ্রেফতারে দুদকের অভিযান অব্যাহত থাকবে। অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, শারীরিক অসুস্থতার কারণে দুদকের জালে এখনই ধরা দিতে চাইছেন না বাছির। পুলিশ বা কারা হেফাজতে গিয়ে নয়, বরং নিজস্ব তত্ত্বাবধানে থেকে সঠিকভাবে চিকিৎসা নিতে চান তিনি। গ্রেফতার এড়াতে এখন কিছুদিন এভাবে গা ঢাকা দিয়ে চলবেন। প্রসঙ্গত, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে রেহাই পেতে দুদকের তৎকালীন পরিচালক এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা দেওয়ার অভিযোগ করেন ডিআইজি মিজানুর রহমান। দুদকের অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ১৬ জুলাই ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় মিজান ও বাছিরের বিরুদ্ধে মামলা করে কমিশন। এর আগে অনুসন্ধানে ঘটনাস্থল পরিদর্শন, ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য গ্রহণ এবং বিশেষজ্ঞ মতামত গ্রহণ ও পারিপার্শ্বিক বিষয় পর্যালোচনা করা হয়েছে। ঘুষ গ্রহণের প্রাথমিক প্রমাণ পেয়ে গত মাসেই বাছির ও তার পরিবারের সদস্যদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বাছিরের আইনজীবী কামাল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শাহজাহানপুরে বাছিরের নিজের বাসায় ও তার আত্মীয়ের বাসায় দুদক অভিযানে গিয়েছিল।

তবে তিনি অসুস্থ, চোখের পীড়ায় ভুগছেন। তিনি চিকিৎসাধীন আছেন। এদিকে বাছিরকে গ্রেফতারে অভিযানে যাওয়ার কথা দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্রও বাংলাদেশ প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেছে। তবে এ বিষয়ে দুদকের সংশ্লিষ্ট ও দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা প্রকাশ্যে কথা বলতে চাননি।

ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে ১৬ জুলাই ডিআইজি মিজানুর রহমান ও দুদকের এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। সংস্থাটির পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা দুদকের ঢাকার এক নম্বর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ডিআইজি মিজানের অবৈধ সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধানের সময় অভিযোগ থেকে রেহাই দিতে তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বাছির। তারা এই মামলায় ঘুষ লেনদেনের আসামি। দুদকের মতে, তাদের ঘুষ লেনদেনের অভিযোগের বিষয়টি ফরেনসিক রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে।

জানা গেছে, অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানের সময় অভিযোগ থেকে রেহাই পেতে এনামুল বাছিরকে মিজানের ৪০ লাখ টাকা ঘুষ প্রদানের কথা গণমাধ্যমে আসার পর ১২ জুন দুদকের আরেক পরিচালককে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ করে কমিশন। ২৪ জুন ৩ কোটি ৭ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ডিআইজি মিজান, তার স্ত্রী, ভাই ও ভাগ্নের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এদিকে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ অনুসন্ধানে ফানাফিল্যাকে প্রধান করে তিন সদস্যের দলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই দলের প্রধান মামলা করেন। এর আগে মামলার অনুমোদন দেয় দুদক।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর