শনিবার, ২০ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
এইডস ঝুঁকিতে ক্যাম্প

রোহিঙ্গা থেকে ছড়াচ্ছে স্থানীয়দের মধ্যে

আক্রান্ত ৪৪৮ জন মারা গেছে ৪৮

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

রোহিঙ্গা থেকে ছড়াচ্ছে স্থানীয়দের মধ্যে

কক্সবাজারের কুতুপালং এবং বালুখালির রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মরণব্যাধি এইচআইভি এইডস রোগে আক্রান্ত হয়ে ৪৮ জন মানুষ মারা যায়। এর মধ্যে রোহিঙ্গা ৩২ জন এবং কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দা ১৬ জন। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের সর্বশেষ প্রতিবেদন মতে, বর্তমানে সরকারি হিসাবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শনাক্তকৃত এইডস রোগী আছে ২৬৬ জন। তবে বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা আরও অনেক বেশি। বর্তমানে ৪৪৮ নারী-পুরুষ এইডস রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে ৩১৯ জন রোহিঙ্গা এবং ১২৯ স্থানীয় বাসিন্দা বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গারা ক্রমাগত এইডস রোডে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রথম দিকে আক্রান্তদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হতো। তবে এখন কক্সবাজার সদর হাসপাতাল এবং উখিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এইডসে আক্রান্ত রোহিঙ্গাদের শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। ইতিমধ্যে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেওয়া ৮৪ রোহিঙ্গাকে উখিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানা যায়। কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. এম এ মতিন বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আক্রান্ত এইডস রোগীর সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে এখন পর্যন্ত এইডস রোগে আক্রান্ত হয়ে ৪৮ জন মারা গেছে। এর মধ্যে স্থানীয়রাও আছে। আক্রান্তদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।’ তিনি বলেন, ‘নানা কৌশলে রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। ফলে তারা কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে। এ কারণে স্থানীয় বাসিন্দারাও ঝুঁকিতে আছে। স্থানীয়দের মধ্যেও এখন এইডস ঝুঁকি বাড়ছে। এ ব্যাপারে স্থানীয়দের সতর্ক থাকতে হবে।’ উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা ডা. এম এ মান্নান বলেন, ‘ক্যাম্পে তো এইডস রোগের ঝুঁকি আছেই। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালু করা বিশেষ কর্নারে প্রায় ৫০০ রোগী চিকিৎসা নিয়েছে এবং বর্তমানে ১২২ রোগী নিয়মিত সেবা নিচ্ছে।’ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের প্রধান ডা. রফিকুল মওলা বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যদি আমাদের দেশের স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ পায়, তাহলে এ রোগ নানাভাবে ছড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই রোহিঙ্গারা যেন কক্সবাজারে ছড়িয়ে না পড়ে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।’         

জানা যায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কেউ সরাসরি এইচআইভি পরীক্ষা করতে আসে না। অন্য রোগের পরীক্ষার সময় ধরা পড়ে বিষয়টি। শনাক্ত হওয়ার পর এইডস রোগীদের নিয়ম মতে কক্সবাজার জেনারেল হাসপাতাল এবং উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

সর্বশেষ খবর