বরিশাল-ঢাকা নৌরুটের মেঘনা নদীর মিয়ারচর চ্যানেলে চরম ঝুঁকি নিয়ে চলছে যাত্রীবাহী নৌযান। সরু ওই চ্যানেলে ডুবে যাওয়া বলগেটটি উত্তোলন না করায় এ ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনায় ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সরু ওই চ্যানেলে গত চার রাতে দুর্ঘটনার উপক্রম হয় বিশালাকার যাত্রীবাহী একাধিক লঞ্চের। কোনো প্রাণহানি না ঘটলেও একটি লঞ্চের ধাক্কায় আরেকটি লঞ্চের অবকাঠামো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রচ ঢেউ ও ডুবে থাকা একটি বলগেটকে পাশ কাটিয়ে যেতে দুর্ঘটনায় পড়ার উপক্রম হয় লঞ্চগুলোর। নৌযান মাস্টারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বরিশাল-ঢাকা নৌরুটের মিয়ারচর চ্যানেল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গত এক বছরে দুবার মিয়ারচর চ্যানেল ড্রেজিং করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। চ্যানেলটি চালু রাখতে সর্বশেষ ছয় মাস আগে ড্রেজিং করে নৌবাহিনী। ওই সময় তারা আড়াই শ ফুট প্রশস্ত চ্যানেল তৈরি করে। মাস দেড়েক আগে সরু ওই চ্যানেলে বালুবাহী একটি বলগেট ডুবে যায়। গত মঙ্গলবার রাতে ওই চ্যানেল অতিক্রমের সময় ডুবে থাকা বলগেট পাশ কাটিয়ে চলতে গিয়ে বরিশাল-ঢাকা রুটের যাত্রীবাহী বিশাল জাহাজ এমভি পারাবত-১২ ও এমভি সুন্দরবন-১১ চরের একপাশে আটকে যায়। পরে ভাটি শুরু হলে দুটি জাহাজই কাত হয়ে ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়। এ ছাড়া গত বুধবার রাত পৌনে ২টায় মিয়ারচর চ্যানেল অতিক্রম করে বরিশাল আসছিল যাত্রীবাহী এমভি সুন্দরবন-১০। এ সময় একই রুটের এমভি পারাবত-১১ লঞ্চ ডুবো বলগেটকে পাশ কাটিয়ে চলতে গিয়ে এমভি সুন্দরবন লঞ্চকে সজোরে আঘাত করে। এতে ব্যাপক ক্ষতি হয় সুন্দরবন-১০ লঞ্চের। ওই লঞ্চের ভিআইপি কেবিনে ছিলেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম এমপি। তিনি অল্পের জন্য রক্ষা পান। গত বৃহস্পতিবার রাতেও ঢাকা থেকে বরিশালগামী এমভি সুরভি-৯ লঞ্চ মিয়ারচর চ্যানেলে বলগেট ডুবে থাকা স্থান অতিক্রমের সময় চরের একপাশে তলানিতে ঠেকে কাত হয়ে পড়ার উপক্রম হয়। সর্বশেষ গত শুক্রবার দিবাগত রাতেও বরিশাল-ঢাকা রুটের প্রতিটি লঞ্চ ঝুঁকি নিয়ে ওই চ্যানেল অতিক্রম করে বলে জানিয়েছেন এমভি পারাবত-১১ লঞ্চের মাস্টার মো. শামীম আহমেদ।