শিরোনাম
রবিবার, ২১ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

যানজটের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় দাবি চেয়ারম্যানের

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

শাহ আমানত বিমানবন্দর সড়ক ও চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় সাম্প্রতিককালে যে তীব্র যানজট হচ্ছে তার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই দায়ী নয় বলে জানিয়েছেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজ। এ যানজট সৃষ্টির পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। গতকাল বন্দর ভবনের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বন্দর চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। টানা বৃষ্টিপাতের জন্য সৃষ্ট জলাবদ্ধতা, পোর্ট কানেকটিং সড়ক সংস্কারের কারণে সৃষ্ট খানাখন্দ, বারিক বিল্ডিং থেকে ফকিরহাট পর্যন্ত ওয়াসার পাইপ লাইন ও সিমেন্ট ক্রসিং এলাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজের জন্য মূল সড়ক সংকুচিত হওয়া এবং বন্দরে গাড়ি ঢোকার বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকার কারণে এ যানজট বেড়েছে বলে মন্তব্য করেন বন্দর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, কয়েকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন পত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলে বন্দর এলাকায় যানজটের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরকেই দায়ী করে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে।

মূলত ১০-১২ দিন নগরে টানা বৃষ্টির কারণে বন্দরের বাইরে বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সড়কে বড় বড় গর্তের কারণে যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে; যা কোনো অবস্থাতেই চট্টগ্রাম বন্দরের কারণে সৃষ্টি হয়নি। এ সময় বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারির পরিমাণও কম ছিল। তারপরও তীব্র যানজটের জন্য মূলত প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্দরের যানবাহন ও গণপরিবহনের একই সড়কে চলাচল ও শহরের জন্য বিকল্প সড়ক তৈরি না হওয়াকে চিহ্নিত করা যায়।

তিনি বলেন, বন্দর থেকে কনটেইনার ও কার্গো পণ্য অতীতে বর্তমানের চেয়ে বেশি খালাস ও সরবরাহ হয়েছে। তখন এ ধরনের কোনো জট দেখা যায়নি। ঘূর্ণিঝড় ফণীর পর গত ৬ মে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৬০০ টিইইউস কনটেইনার ও কার্গো ডেলিভারি হয়। রমজানে গত ১২ জুলাই ৪ হাজার ৮০০ টিইইউস  কনটেইনার ডেলিভারি হয়। তখনো বন্দরের বাইরে আজকের মতো তীব্র যানজট দেখা যায়নি।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বন্দর চেয়ারম্যান জানান, চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতিদিন গড়ে ৭ হাজার ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও ট্রেইলার ঢোকে। আইএসপিএস কোডের শর্ত অনুযায়ী এসব গাড়ি, চালক ও সহকারীর পরিচয় নিশ্চিত করতে ডাটাবেজ তৈরি হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৩২ হাজার ৭৬৯ চালক-সহকারী ডাটাবেজভুক্ত হয়েছেন। ২৯ হাজার ৭৬৯ জনকে ডিজিটাল পাস দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ১৭টি বেসরকারি অফডকের ট্রেইলার ২৪ ঘণ্টা চলাচলের ডাটাবেজ সম্পন্ন হয়েছে। তা ত্বরান্বিত করতে বন্দরের গেটগুলোর পাশাপাশি সুবিধাজনক স্থানে এ কার্যক্রম শিগগির শুরু করে ডাটাবেজের জন্য আরও বুথ বাড়ানো হবে। এটা একবার হয়ে গেলে চালক-হেলপারদের গাড়ি নিয়ে বন্দরে ঢুকতে আর জটিলতা থাকবে না।

বন্দর ও বিমানবন্দর কেন্দ্রিক সড়কে যানজট নিরসনে সম্মিলিতভাবে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করে চেয়ারম্যান বলেন, প্রস্তাবিত দুটি রিং রোড বাস্তবায়ন জরুরি। একটি হলো আগ্রাবাদ এক্সেস রোড-বড়পুল-আনন্দবাজার-ইপিজেড সড়ক, অন্যটি জিইসি-সাগরিকা-বেড়িবাঁধ সড়ক। এ সড়ক দুটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হলে চট্টগ্রাম শহরের লাইফ লাইনখ্যাত এয়ারপোর্ট-আগ্রাবাদ-লালখানবাজার সড়কে যানজটের তীব্রতা কমে আসবে। পাশাপাশি জনদুর্ভোগ লাঘবে বন্দরের পক্ষ থেকে বে টার্মিনাল ইয়ার্ড নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করেছে। সেখানে এফসিএল কনটেইনারের পণ্য ডেলিভারির পাশাপাশি আধুনিক ট্রাক টার্মিনালও নির্মাণ করা হচ্ছে। এ প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন হলে একদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের চাপ কমবে এবং সড়কে কনটেইনার ও পণ্যবাহী যান চলাচলও কমবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বন্দরের সদস্য (প্রশাসন) জাফর আলম, সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) ক্যাপ্টেন  শফিউল বারী, পরিচালক (নিরাপত্তা) লে. কর্নেল তানভির আহমেদ জায়গীরদার, বন্দর সচিব ওমর ফারুক প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর