মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
মেয়র পদে ৪ বছরপূর্তি উপলক্ষে নাছির

পরিচ্ছন্ন চট্টগ্রাম নগরী গড়ার কাজ জোরদার করা হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

পরিচ্ছন্ন চট্টগ্রাম নগরী গড়ার কাজ জোরদার করা হবে

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেছেন, সবুজ (গ্রিন) ও পরিচ্ছন্ন (ক্লিন) চট্টগ্রাম নগরী গড়ে তোলার যে কার্যক্রম তিনি শুরু করেছেন তা আরও জোরদার করা হবে।

আ জ ম নাছির চসিকের মেয়র পদে তার ৪ বছরপূর্তি উপলক্ষে ২১ জুলাই বিকালে নগরভবনে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কথা বলছিলেন। ২৬ জুলাই তার ৪ বছর পূর্তি হবে। তিনি ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন। শপথ নেন ৬ মে। দায়িত্ব গ্রহণ করেন ওই বছরের ২৬ জুলাই। নির্বাচনে মেয়র জলাবদ্ধতা নিরসন এবং ক্লিন ও গ্রিন সিটি নির্মাণসহ ৩৬ দফা প্রতিশ্রুতি সংকলিত ইশতেহার প্রকাশ করেছিলেন।

মেয়র বলেন, ‘নির্বাচনী ওয়াদা অনুসারে তিনি ডোর টু ডোর পদ্ধতিতে বর্জ্য অপসারণ করে গ্রিন ও ক্লিন সিটি গড়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। আগে ডাস্টবিন ছিল এক হাজার ৩৫০টি, এখন আছে মাত্র ৬০০টি। পর্যায়ক্রমে সব ডাস্টবিন সরিয়ে ফেলা হবে। তখন নগরে আর কোনো খোলা ডাস্টবিন দেখা যাবে না। অতীতে দীর্ঘ সময় ধরে সড়কে আবর্জনা পড়ে থাকত, এখন আর থাকছে না। অতীতে অন্তত ২০টি সড়ক ও  মোড়ে খোলামেলাভাবে আবর্জনা পড়ে থাকলেও এখন আর তা নেই। তাছাড়া পরিবেশ দূষণরোধ, জনগণের ভোগান্তি কমানো এবং যানজটের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বর্জ্য অপসারণ কাজ গত তিন বছর ধরে রাতের বেলাতেই চলছে।

আগামী বছর অনুষ্ঠেয় চসিক নির্বাচন বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মেয়র বলেন, নির্বাচন নিয়ে তার প্রত্যাশা আকাশচুম্বী। নির্ধারিত মেয়াদ শেষে নির্বাচন হবে। তিনি বলেন, নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েই রাজনীতি করে আসছি। নির্বাচনও আমার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। নির্বাচনে অংশ নেব ইনশাআল্লাহ।’ 

চার বছরে সফলতা-ব্যর্থতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নিয়মের মধ্যে থেকে আমি প্রতিটি কাজই করতে সচেষ্ট থেকেছি এবং এখনো সচেষ্ট রয়েছি। সামগ্রিক ক্ষেত্রে একটা দৃশ্যমান পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছি। তাই তার বিশ্বাস, যৌক্তিক সময়ের পর এই নগর শতভাগ শৃঙ্খল, পরিচ্ছন্ন এবং আধুনিক নগরের রূপ নেবে।’

নগরের আলোচিত ইস্যু জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে নগরপিতা বলেন, ‘২০১৬ সালের জানুয়ারিতে প্রথম চ্যালেঞ্জ হিসেবে জলাবদ্ধতা নিরসনের উদ্যোগ নিই। এর অংশ হিসেবে চায়না পাওয়ার লিমিটেডের একটি বিশেষজ্ঞ টিম পুরো নগরে জরিপ করে জলাবদ্ধতা নিরসনের চূড়ান্ত একটি রূপরেখা তৈরি করে। এ কাজে প্রতিষ্ঠানটি ৪৭ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। এ রূপরেখা মতে আমরা প্রকল্প তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছি। এটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় হয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) পর্যন্ত গিয়েছিল। কিন্তু এরই মধ্যে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্প অনুমোদন পায়। একই বিষয়ে দুটি প্রকল্প রাখার যৌক্তিকতা না থাকায় চউক এ কাজটি করছে।’ 

‘প্রকল্প পেলে চসিক জলাবদ্ধতা নিরসনে সক্ষম কিনা’ এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অবশ্যই। কারণ এ কাজে উপকরণ ও জবলনসহ প্রয়োজনীয় সব সুবিধাই রয়েছে সিটি করপোরেশনের। তাই চসিকের পক্ষে জলাবদ্ধতা নিরসন খুবই সম্ভব হবে। তাছাড়া চসিকই দীর্ঘদিন ধরে এ কাজ করে আসছে, ফলে অভিজ্ঞতাও বেশি।’   

তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে বলা যায়, চউক কোনো রকমের স্টাডি ছাড়াই প্রকল্পটি গ্রহণ করেছে। কারণ এখন পর্যন্ত জলাবদ্ধতা নিয়ে তারা কোনো নকশা দিতে পারেনি। ফলে এখন কাজ বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা যোগ হয়েছে। তাছাড়া কাজের অভিজ্ঞতা না থাকায় প্রকল্পের টাকাও ব্যয় করতে পারেনি।’ 

সিটি মেয়র বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি সফলভাবে কাজ করতে সচেষ্ট ছিলেন। তাই তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ক্ষেত্রে আমি সফল। চসিকের আইনপ্রদত্ত সুনির্দিষ্ট প্রতিটি দায়িত্ব আমি যথাযথ পালন করেছি। অতীত সময়ের সঙ্গে আমার কাজের তুলনামূলক বিচার-বিশ্লেষণ করলে আমার গ্রাফটা অনেক ওপরে থাকবে। যেমন বলা যায়, আগে যা পাকা রাস্তা ছিল এখন তার দ্বিগুণ হয়েছে। একইভাবে কাঁচা সড়ক পাকা করা, নষ্ট সড়ক মেরামত করা, পানি নিষ্কাশনে ড্রেনে-নালার সংখ্যা বৃদ্ধি, নতুন সড়ক নির্মাণ করা, নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণ করাসহ নানা ক্ষেত্রে আমি সফলভাবে কাজ করেছি।’  

নগরপিতা বলেন, ‘সিটি করপোরেশন আইন মতে, সড়ক আলোকায়ন, বর্জ্য অপসারণ ও সড়ক মেরামত আমাদের অন্যতম কাজ। এসব কাজ আমি শতভাগ স্বচ্চ ও পরিচ্ছন্নভাবে করছি। বর্তমানে নগরের ৫০ শতাংশ সড়কে আলোকায়নের ব্যবস্থা রয়েছে। কিছুদিন আগে ২৬০ কোটি ব্যয়ে ৪৬৬ কিলোমিটার সড়কে বাতি দেওয়ার প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে নগর শতভাগ আলোকায়ন হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর