শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

কক্সবাজারে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে আওয়ামী লীগ

উপজেলা নির্বাচন

আয়ুবুল ইসলাম, কক্সবাজার

বিগত উপজেলা নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে কক্সবাজার আওয়ামী লীগ। বিষয়টি এখন প্রায় চূড়ান্ত। চলতি মাসের মধ্যেই বিষয়টি দৃশ্যমান হবে। এ ক্ষেত্রে বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচিতদেরও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। এ তালিকায় রয়েছেন কক্সবাজার জেলার অন্তত সাত নেতা, যারা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তারা বিগত উপজেলা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েও পাননি। পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে দুজন ছাড়া পাঁচ নেতা নির্বাচিতও হয়েছেন। বহিষ্কারের তালিকায় থাকা সম্ভাব্য নেতাদের মধ্যে রয়েছেন কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নুরুল আবছার, রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রামু উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাফর আহমদ, মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও মহেশখালী উপজেলা চেয়ারম্যান শরীফ বাদশা, পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম এবং টেকনাফ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নুরুল আলম। উল্লিখিতদের মধ্যে শরীফ বাদশা, জাফর আহমদ ও নুরুল আলম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারি। ফজলুল করিম সাঈদীর বিরুদ্ধে ভুয়া লাইসেন্স প্রদর্শন করে অস্ত্র কেনার চেষ্টায় দায়ের করা মামলায় আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। আর জাহাঙ্গীর আলম বর্তমানে কারাগারে। জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে এরই মধ্যে একটি তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। বিগত উপজেলা নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের চিহ্নিত করতেই তালিকাটি প্রণয়ন করা হয়।

সে জন্য কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের কাছে মতামত চাইলে জেলা থেকে একটি তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমেও বিদ্রোহীদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হয়। সেই তালিকা অনুসরণ করেই বিদ্রোহীদের বহিষ্কারের দিকে এগোচ্ছে কেন্দ্র। সংগঠনের শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থেই এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। বিদ্রোহী প্রার্থীদের সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে দেওয়া হবে কারণ দর্শানো নোটিস। সেই নোটিসের সদুত্তর দিতে না পারলে সংগঠন থেকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করা হবে। সাময়িকভাবে বহিষ্কার থেকে শুরু করে চূড়ান্ত বহিষ্কার পর্যন্ত সব প্রক্রিয়াই সম্পন্ন করবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এতে জেলা আওয়ামী লীগের কোনো হাত নেই। এমন তথ্যই দিলেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ‘বিদ্রোহীদের নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করতে আমরা আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা সে আহ্বান উপেক্ষা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। বিষয়টি কেন্দ্রকে অবহিত করেছি। সংগঠন থেকে বিদ্রোহীদের বহিষ্কার করা হলে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। বরং সংগঠনে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।’

জানা গেছে, উল্লিখিতদের বহিষ্কারের ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। সোহেল সরওয়ার কাজলকে বহিষ্কারের ব্যাপারে অনড় রয়েছেন তার অনুজ কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল। নুরুল আলমকে বহিষ্কারের ব্যাপারে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি। জাহাঙ্গীর আলম ও ফজলুল করিম সাঈদীর ব্যাপারে সংসদ সদস্য জাফর আলমের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট। তাদের বহিষ্কার করা হলে অন্যরাও ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে বহিষ্কারের শিকার হবেন।

সর্বশেষ খবর