শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

সুদ হারে পরিবর্তন আনছে হাউস বিল্ডিং

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

সুদের হারে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে আবাসন খাতে ঋণদানকারী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন (বিএইচবিএফসি)। প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রো এলাকায় ৯ শতাংশ সুদে আবাসন ঋণ দেবে। এ খাতে ঋণের সিলিং বর্তমানে ১ কোটি থেকে বাড়িয়ে ২ কোটি টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব দিয়েছে। এ ছাড়া মফস্বলে বসবাসরত মধ্যবিত্তের আবাসনের কথা চিন্তা করে সুদের হার কমিয়ে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ৭ থেকে ৮ শতাংশ হারে গৃহঋণ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে প্রস্তাব পাঠিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলেই সুদ হার কমানোর নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিএইচবিএফসি ঋণের সুদের হারের সিলিং সাড়ে ৮ শতাংশ ও ৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে যথাক্রমে ৮ শতাংশ ও ৭ শতাংশ নির্ধারণের একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে। প্রস্তাবটি অনুমোদনের লক্ষ্যে নথি উপস্থাপন করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিএইচবিএফসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেবাশীষ চক্রবর্ত্তী বলেন, মফস্বলে বসবাসরত মধ্যবিত্তের আবাসনের কথা চিন্তা করে সুদের হার কমানোর প্রস্তাব দিয়েছি। আমাদের দুটো প্রস্তাব রয়েছে, এক : পল্লীমা আবাসন ঋণে সুদের হার সাড়ে ৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ নির্ধারণ করা; এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৬০ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হবে। আর কৃষক আবাসন ঋণের সুদের হার ৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে। সূত্র জানায়, মফস্বলের পাশাপাশি ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রো এলাকায় বাড়ি নির্মাণ ও ফ্ল্যাট কিনতে সুবিধা বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএইচবিএফসি। এক্ষেত্রে সুদের হার ৯ শতাংশ বহাল রেখে বর্তমানে বাড়ি নির্মাণের যে ঋণের সিলিং ১ কোটি টাকা, সেটি বাড়িয়ে ২ কোটি টাকা এবং ফ্ল্যাট কেনার জন্য ঋণের সিলিং ৮০ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ কোটি ২০ লাখ টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। দেবাশীষ চক্রবর্ত্তী বলেন, জমির পরিমাণ দিন দিন কমে যাচ্ছে। যারা নিজ উদ্যোগে বাড়ি নির্মাণ করতে চান, তারা যেন পরিকল্পনা অনুযায়ী বাড়িটি নির্মাণ করতে পারেন সে বিষয়টি মাথায় রেখে ঋণের সিলিং ১ কোটি থেকে বাড়িয়ে ২ কোটি টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছি। তিনি বলেন, রাজধানীতে তিন কাঠার প্লটে ৬ থেকে ৭ তলা এবং ৫ কাঠার প্লটে ৯ তলা পর্যন্ত বাড়ি নির্মাণ করা যায়। যেহেতু বাড়ি নির্মাতারা আমাদের কাছে জমি মর্টগেজ দেবেন, সে কারণে অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে যাতে ঋণ নিতে না হয় সে কারণে ঋণের সিলিং বাড়িয়ে দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দিয়েছি। এতে করে বাড়ি নির্মাতা নিজে বসবাস করে ভাড়ার টাকায় কিস্তি পরিশোধের সুযোগ পাবেন।

তিনি বলেন, ঢাকা মেট্রোর পাশাপাশি রাজধানীর পূর্বাচলকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পূর্বাচলে যেসব জায়গায় রাস্তা হয়েছে ও বিদ্যুৎ সুবিধা গেছে, সেসব এলাকায় আমরা ঢাকা মেট্রোর মতো ৯ শতাংশ সুদে সর্বোচ্চ ২ কোটি টাকা ঋণের সিলিং করার প্রস্তাব করেছি। এতে করে পূর্বাচলে আবাসন খাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।

সর্বশেষ খবর