শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

কারাগারেই রমরমা মাদক ব্যবসা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে চলছে রমরমা মাদক ব্যবসা। দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের নেত্বত্বে অনেকটা ওপেন সিক্রেটভাবে চলছে মাদক বাণিজ্য। অভিযোগ রয়েছে, কারাগারের ভিতর অবৈধ এ বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রয়েছে কয়েকজন কারারক্ষী ও কর্মকর্তা।

যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার কামাল হোসেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে যাওয়ার কয়েদি ও হাজতিদের মাধ্যমে কারাগারে মাদক প্রবেশ করছে। গত দুই মাসে মামলার হাজিরা দিতে গিয়ে মাদক নিয়ে অভিনব কায়দায় কারাগারে প্রবেশের সময় ১২ জন হাজতির কাছ থেকে ইয়াবা জব্দ করা হয়। মাদক উদ্ধারের ঘটনায় পৃথক ১২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। কারাগারে মাদকের ব্যবহার নিয়ে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স। মাদকের সঙ্গে যারই সম্পৃক্ততা থাকবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের কয়েদি ও হাজতির বেশির ভাগই হচ্ছে মাদক সেবন, ব্যবসা ও পাচারের মামলার আসামি। তারা কারাগারের ভিতরে আসার পরও সেবন ও ব্যবসা অব্যাহত রেখেছে। বন্দীদের পাশাপাশি জমাদার ও কারারক্ষীদের একটি অংশ এ মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত। অসাধু কিছু কারারক্ষী ও কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ও কয়েকজন দাগি কয়েদি মাদক ব্যবসার একটি বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করে। আদালতে হাজিরা দিতে যাওয়া বন্দীদের পায়ুপথ, বিশেষ প্যাকেট করে পাকস্থলিতে করে, গোপনাঙ্গে বেঁধে, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ, শার্ট, প্যান্টসহ নানা কৌশলে শরীরের বিভিন্ন অংশে মাদক নিয়ে কারাগারে ঢুকে পড়ে। এ ছাড়া কারা অভ্যন্তরে স্বজনদের দেওয়া খাবারের সঙ্গে ইয়াবা, হেরোইন ও গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য প্রবেশ করছে। কতিপয় কারারক্ষী মাদকদ্রব্য ভিতরে বহন করে নিয়ে মাদক ব্যবসায়ীর (কয়েদি) হাতে পৌঁছে দিয়ে আসে। সম্প্রতি অভিন্ন কায়দায় কারাগারে ইয়াবা নিয়ে যাওয়ার পথে সাইফুল ইসলাম নামে এক কারারক্ষীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, কারাগারকেন্দ্রিক মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কয়েকটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেটের সদস্যরা কারাগারে মাদক প্রবেশের জন্য ব্যবহার করে হাজিরা দিতে আসা বন্দী ও কয়েদিদের। সিন্ডিকেটের লোকজন আদালত চত্বরে এসে বন্দীদের হাতে ছোট ছোট মাদকের পুঁটলি তুলে দেয়। ওই মাদকদ্রব্য বহন না করলে কারাগারে নির্যাতনের শিকার হতে হয়। নির্যাতনের ভয়ে অনেকে মাদকদ্রব্য বহন করতে বাধ্য হন। পরে লুঙ্গি ও শার্টের সেলাইয়ের ভাঁজের ভিতরে, শুকনো মরিচ, পিয়াজ, টুথপেস্ট, আপেল ও সিগারেটের প্যাকেটে করে ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয় মাদকের চালান।

সর্বশেষ খবর