শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

ব্যক্তিগত ক্ষোভে প্রিয়া এসব বলতে পারেন

-রানা দাশগুপ্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, পৈতৃক বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রিয়া সাহা এক মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেও বিচার পাননি। ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে অভিযোগ করে থাকতে পারেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে প্রিয়া সাহা সংখ্যালঘু নির্যাতনের ব্যাপারে যে অভিযোগ করেছেন, তা তিনি নিজ দায়িত্বে করেছেন। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত  এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রানা দাশগুপ্ত বলেন, প্রিয়া সাহা সংগঠনের অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক এটি সত্য। তবে সাংগঠনিক কোনো সিদ্ধান্ত বা দায়িত্ব নিয়ে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাননি, বা মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। তিনি যা করেছেন, নিজ দায়িত্বে করেছেন। এর সঙ্গে সংগঠনের কোনো সম্পর্ক নেই। প্রিয়া সাহাকে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রিডম হাউসের এক বিজ্ঞপ্তিতে দেখেছি, প্রিয়া সাহাকে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। কোনো কোনো মার্কিন গণমাধ্যমে আমাকে সংগঠনের সভাপতি, আর প্রিয়া সাহাকে সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দেওয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আমি বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নই, সাধারণ সম্পাদক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে এবং সাংগঠনিক পরিচিতি নিয়ে সৃষ্ট বিভ্রান্তির পরিপ্রেক্ষিতে এটিকে সংগঠনবিরোধী কর্মকা  বিবেচনায় বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ২৩ জুলাই অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির জরুরি সভায় প্রিয়া সাহাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে এবং তাকে সাংগঠনিক সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়।’ রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘প্রিয়া সাহা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশ থেকে ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোক ডিজঅ্যাপিয়ার হয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন। ডিজঅ্যাপিয়ার বলতে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন তা তিনিই ভালো বলতে পারবেন। এটি যদি স্বাধীন বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের গুম ও নিখোঁজ অর্থে বলে থাকেন, তবে তা অসত্য এবং আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ও বৈষম্য অব্যাহত আছে। দুঃখজনক হলেও এটি সত্য, স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী অবস্থান থেকে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ও বৈষম্য অব্যাহত আছে। তবে এটিও অস্বীকারের উপায় নেই, বিগত ১০ বছরে, অন্তত এ সরকারের আমলে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় বেশ খানিকটা অগ্রগতি ঘটেছে। অর্পিত সম্পত্তি আইন বাতিল হয়ে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, ২০০১ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক সদিচ্ছায় প্রণীত হয়। যদিও এর বাস্তবায়ন আজও থমকে আছে। ২০১১ থেকে ২০১৬ সালে হলি আর্টিজান ঘটনার আগ পর্যন্ত মুক্তমনা অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তিবিশেষকে টার্গেট করে আক্রমণ ছাড়াও সংখ্যালঘু এলাকাগুলোকে চিহ্নিত করে বিশেষ মহলের হামলার কথা এত সহজে ভোলার নয়।’ সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য নিমচন্দ্র ভৌমিক, কাজল দেবনাথ, নির্মল রোজারিও প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর