শিরোনাম
শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

খুলনার পরিত্যক্ত নিউজপ্রিন্ট মিলে হরিলুট

মিলগেটে ব্যাংকের নোটিস

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

খুলনার পরিত্যক্ত নিউজপ্রিন্ট মিলে হরিলুট

২০০২ সাল থেকে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে দেশের বৃহত্তম কাগজকল খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলের। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির কাছে সুদে আসলে ব্যাংকের পাওনা প্রায় ৩২২ কোটি টাকা। এ অবস্থায় মিলের একাংশের জমি বিক্রি করে ‘রূপসা ৮০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড বিদ্যুৎ প্রকল্প’ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)। এ ব্যাপারে নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে সরকারের চুক্তি হলেও জমি বেচাকেনা হয়নি। তবে ওই চুক্তির ভিত্তিতে রাতের আঁধারে মিলের ৫০ একর জমির ওপরে থাকা মূল্যবান স্থাপনা, যন্ত্রাংশ ও গাছপালা কেটে নেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনা জানাজানি হলে মিলের প্রধান ফটকে বন্ধকী নোটিস টাঙিয়ে দিয়েছে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। জানা যায়, ঋণের টাকা পরিশোধ না করেই মিলের সম্পত্তি বিক্রিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে ব্যাংক এ পদক্ষেপ নিয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, মিলের প্রধান ফটক বন্ধ রেখে ভিতরে কারখানার অংশ বাদে অধিকাংশ আবাসিক ভবন, শ্রমিক কোয়ার্টার, বিনোদন কেন্দ্রসহ অন্যান্য স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়েছে। মিলের মালামাল ও গাছপালা কেটে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যুৎ কোম্পানির কাছ থেকে নামমাত্র মূল্যে দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদারি  প্রতিষ্ঠান মেসার্স সুভাস দত্ত এন্টারপ্রাইজ মালামাল নিয়ে যাচ্ছে। এদিকে ঋণ পরিশোধ না করেই স্থাপনা অপসারণকে অযৌক্তিক বলে দাবি করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। সোনালী ব্যাংক, খুলনা কর্পোরেট শাখার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মুন্সী জাহিদুর রশীদ বলেন, ১৯৯৮ সালে কাঁচামাল সংগ্রহ করতে মিলের ৮৮ দশমিক ৬৭৫ একর জমি বন্ধক রেখে ৫৭ কোটি টাকা ঋণ নেয় মিল কর্তৃপক্ষ। যা সুদে-আসলে বর্তমানে ৩২২ কোটি টাকা হয়েছে। তিনি বলেন, স্থাপনা ও ভবন বিক্রির দরপত্র স্থগিতের জন্য বিসিআইসি ও মিল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জমি ও স্থাপনা বিক্রি বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নিউজপ্রিন্ট মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রদীপ কুমার মজুমদার বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নিলাম বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মিলের ৫০ একর জমিতে থাকা স্থাপনা ও গাছপালা অপসারণ করছে। কিন্তু এখনো মিলের জমি তাদেরকে দলিল করে দেওয়া হয়নি। ওই জমি সোনালী ব্যাংকের কাছে মর্টগেজ রয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯৫৭ সালে ভৈরব নদের তীরে ১০১ একর জমির ওপর খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিল চালু হয়। পাঠ্যপুস্তক, র‌্যাপার বোর্ড ও সংবাদপত্র মুদ্রণে কাগজের চাহিদা পূরণ করতে ১৯৫৯ সালে নিউজপ্রিন্টের উৎপাদন শুরু হয়।

সর্বশেষ খবর