চট্টগ্রামে হাত বাড়ালেই মিলছে রং-বেরঙের ইয়াবা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের চোখ ধোঁকা দেওয়ার নবকৌশল হিসেবে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা নানান রঙের ইয়াবা আনছে। পাশাপাশি ইয়াবা পাচারের রুটও পরিবর্তন করেছে তারা। টেকনাফ-কক্সবাজার পুরনো রুটের পরিবর্তে নিত্যনতুন রুট দিয়ে কক্সবাজার থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দিচ্ছে ইয়াবা।
চট্টগ্রাম মেট্রো মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামীম আহমেদ বলেন, ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জিরো ট্রলারেন্সের কারণে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা রং ও পাচারের রুট পরিবর্তন করেছে। এরই মধ্যে কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন রঙের ইয়াবার চালান আটক করা হয়েছে। ইয়াবার রং ভিন্ন হলেও কার্যকারিতা প্রায় সব রঙের একই।’ চট্টগ্রাম মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক তপন শর্মা বলেন, ‘নানান রঙের ইয়াবাসহ গ্রেফতার হওয়া ইয়াবা ব্যবসায়ীরা জিজ্ঞাসাবাদে জানান, প্রশাসনকে ধোঁকা এবং সেবনকারীদের মধ্যে ভিন্নতা আনতে ইয়াবার রং পরিবর্তন এনেছে মাদক ব্যবসায়ীরা।’ সাম্প্রতিক সময়ে নানান রঙের কয়েক চালান ইয়াবা আটক করেছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও পুলিশ। ওইসব চালানের সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া মাদক ব্যবসায়ীরা জানায়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে ধোঁকা দিতেই মিয়ানমারের ইয়াবা কারবারিদের রং পরিবর্তনের তাগাদা দিয়েছে দেশের ইয়াবা কারবারিরা। এরপর থেকে নানান রঙের ইয়াবা আসছে বাংলাদেশে। এরই মধ্যে নীল, সাদা, সবুজ, হলুদ এবং অফ হোয়াইট রঙের ইয়াবার আটক চালক করেছে চট্টগ্রামের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। আটক হওয়া ইয়াবাগুলোর রাসায়নিক পরীক্ষার করে দেখা গেছে- গোলাপি রঙের ইয়াবার চেয়ে দ্বিগুণ ওজন ও আকার অন্য রঙের ইয়াবাগুলো। তবে গোলাপী রঙের ইয়াবার মতই এগুলোতে রয়েছে মিথাইল অ্যামফিটামিনসহ সব ধরনের উপাদান। তবে ভিন্ন রঙের ইয়াবাগুলো তুলনামূলক গন্ধহীন হয়ে থাকে। নানান রঙের ইয়াবাগুলোও গোলাপী রঙের ইয়াবার চেয়ে চাহিদা বেশি রয়েছে। তাই খুচরা বাজাওে গোলাপী রঙের ইয়াবার চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। চট্টগ্রামে প্রতি পিস সাদা রঙের ইয়াবা বিক্রি হচ্ছে আড়াইশ থেকে তিনশ টাকা, নীল রঙের দুইশ বিশ টাকা, সবুজ রঙের ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। ইয়াবার রং পরিবর্তনের পাশাপাশি কক্সবাজার থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ইয়াবা পাচারের রুটেও পরিবর্তন এনেছে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। তারা নৌরুট ব্যবহারের পাশাপাশি পার্বত্য এলাকাকে ব্যবহার করছে। চট্টগ্রাম মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক তপন শর্মা বলেন, এখন ইয়াবা ব্যবসায়ীরা বিলাসবহুল গাড়ি কিংবা ক্লোজ ডোর গাড়িতে করে ইয়াবা পরিবহন করছে না। তারা এখন লোকাল বাস ও সিএনজি ট্যাক্সি করে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম নগরীতে ইয়াবা চালান নিয়ে আসছে। এ কায়দায় ইয়াবা আনার সময়ও কয়েকটি চালান আটক করা হয়।