শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

এমপিওতে অনিয়ম ডিডির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অনিয়ম করে এমপিও পেয়েছেন বহু শিক্ষক। অনুমোদনহীন বিশ^বিদ্যালয়ের সনদ দিয়ে এমপিও’র পাশাপাশি নেওয়া হয়েছে পদোন্নতি। আর এসবে সহযোগিতার অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরে (মাউশি) উপ-পরিচালক ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরীর বিরুদ্ধে। মাউশির রাজশাহী অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। যেহেতু বিষয়টা নিয়ে তদন্ত চলছে। তবে আমি বলব, সবগুলো অভিযোগই মিথ্যা।’ অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ নিষিদ্ধ হলেও নওগাঁর আত্রাই উপজেলার খনজোর জয়সাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী গ্রন্থাগারিক নাজমা আকতার বানুকে এমপিওভুক্ত করেছেন। তার ইনডেক্স নম্বর এএল-১১৪২৮৪০। দারুল ইহসানের সনদে একই পদে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার দৌলতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের মো. সেলিমেরও এমপিও করে দেওয়া হয়েছে। যোগ্য অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও ২০১৬ সালে এমপিওভুক্ত হয়েছেন রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বিজ্ঞানের শিক্ষক মোজাফফর হোসেন। তার ইনডেক্স নম্বর-১১৩১৪৬০।

দুর্গাপুর উপজেলার পানানগর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানের শিক্ষক মো. রোকনুজ্জামানও এমপিও হয়েছেন অনিয়ম করে। ১২ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা না থাকলেও চারঘাট উপজেলার নিমপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে জাল সনদে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান ইমদাদুল হক।

পরবর্তীতে মন্ত্রণালয় এই দুর্নীতি ধরতে পারলে ইমদাদুল হকের বেতন বন্ধ করা হয়। জাল নিবন্ধন সনদে এমপিওভুক্ত হন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জেসমিন আরা।

অভিযোগে আরও জানা গেছে, বাঘা উপজেলার কেশবপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান একই উপজেলার দিঘা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। অনুমোদনহীন আমেরিকা-বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএড সনদ দিয়ে তিনি প্রথমে বিএড স্কেল পান। তারপর একই সনদ দিয়ে তিনি সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে এমপিও করান। অথচ আমেরিকা-বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএড কোর্সের অনুমোদনই নেই। বিষয়টি জানাজানি হলে ডিডি শরমিন ফেরদৌস রয়্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ভুয়া সনদ দিয়ে হাবিবুরের এমপিও করে দেন। এছাড়া ছাতারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শাখা শিক্ষক এমদাদুল হকেরও এমপিও করা হয়েছে অনিয়ম করে। সনদে পদার্থ ও রসায়ন না থাকলেও পুঠিয়ার সাধনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জহুরুল হককে বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবেই এমপিওভুক্ত করে দিয়েছেন।

অভিযোগ আছে, মাউশির রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালক এই অনিয়ম করেছেন। এনিয়ে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ হলে তার বিরুদ্ধে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক হবিবুর রহমানকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক হবিবুর রহমান বলেন, ‘এমপিওভুক্তিতে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে, এমন একটি অভিযোগের তদন্ত আমাকে করতে দেওয়া হয়েছে। চার-পাঁচ দিন আগে আমি আদেশটি পেয়েছি। আমি ডিডি শরমিন ফেরদৌসকে কাগজপত্র প্রস্তুত করতে বলেছি। তাই মাউশির মহাপরিচালকের কাছে আমি কয়েকদিন সময় চেয়েছি। আগামী ৪/৫ তারিখে আমি মাউশিতে গিয়ে অভিযোগগুলোর তদন্ত করব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর