শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

আইজিপি পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি!

নিজস্ব প্রতিবেদক

এইচএসসি ফেল টিপু মিয়া ওরফে মমিনুল হক (৩৫)। টি এম ট্রেডার্স নামে একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। প্রতিষ্ঠানের চিঠি আদান-প্রদান করাই ছিল তার কাজ। কিন্তু এ কাজে যে পরিমাণ বেতন পেতেন, তাতে তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না। তার আরও টাকা প্রয়োজন। কিন্তু অতিরিক্ত টাকা তিনি পাবেন কোথায়? কাজও তেমন জানেন না। অল্প পরিশ্রমে তিনি টাকা আয়ের পথ খুঁজতে থাকেন। একসময় চিন্তা করলেন, চিঠি আদান-প্রদানের যে কাজ করছেন, সেটা দিয়েই তো টাকা আয় করা যায়। যেমন ভাবনা, তেমন ভাবেই শুরু করলেন। চিঠি বিলি করে এক অভিনব পন্থায় টাকা রোজগারে নেমে পড়লেন। নিজে পুলিশপ্রধান পরিচয়ে বিভিন্ন স্থানে চিঠি দিতে শুরু করলেন। আইজিপির চিঠি বানিয়ে বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে চাঁদাবাজি শুরু করলেন। মিথ্যা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে এভাবে তার ভালোই যাচ্ছিল। চাকরিটা ছেড়ে দিয়ে পুরোদস্তুর প্রতারক বনে যান টিপু মিয়া। কিন্তু বাদ সাধে পুলিশ। ধরা পড়ে যান এই ভুয়া আইজিপি। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গত বুধবার রাজধানীর পল্টন থেকে প্রতারক টিপু মিয়াকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন। তিনি বলেন, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দিবস সামনে রেখে ব্যানার, ফেস্টুন, লিফলেট ছাপানোর জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে টাকা চেয়ে চিঠি পাঠাতেন তিনি। আর এজন্য পুলিশের লোগো ও প্যাডে মহাপরিদর্শকসহ (আইজিপি) উচ্চপদস্থদের নাম, স্বাক্ষর ব্যবহার করতেন। দীর্ঘদিন ধরে এই অভিনব উপায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টাকা আদায় করে আসছিলেন টিপু। সম্প্রতি বেসরকারি সাউথ-ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আইজিপি পরিচয়ে টাকা চেয়ে চিঠি পাঠান টিপু মিয়া। সাউথ-ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আইজিপির কাছে জানালে এটি প্রতারণা বলে নিশ্চিত হয়। পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, প্রতারণার জন্য টিপু মিয়া আইজিপিসহ পুলিশ সদর দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে আসছিলেন। পুলিশের লোগোসহ ভুয়া প্যাডে নিজেই কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর করে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে টাকা চেয়ে চিঠি পাঠাতেন।

পুলিশ সপ্তাহ, শোক দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে লিফলেট, ব্যানার, ফেস্টুন প্রকাশের জন্য ওই বিভিন্ন পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিতেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠিয়ে ফোনে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতেন, টাকা দিতে রাজি না হলে দেওয়া হতো হুমকি। আবদুল বাতেন বলেন, টিপু মিয়া দীর্ঘদিন ধরে অভিনব পন্থায় প্রতারণা করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর