শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

কোরবানির পশু এবার ফেসবুকে

বগুড়ায় ১ টন ওজনের গরু বিক্রি হলো ৭ লাখে

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

কোরবানির পশু এবার ফেসবুকে

বগুড়ায় শখের বসে গরুর ফার্ম গড়ে লাভবান হয়েছেন শহরের সাবগ্রাম এলাকার বাসিন্দা খোরশেদ আলম চঞ্চল (৩৭)। তার খামারে লালন পালন করা আমেরিকান ব্রাহামা জাতের বাংলা ক্রস ১ টন ওজনের একটি গরুর দাম হাঁকা হয়েছে সাড়ে ৮ লাখ টাকা। দরদামের পর ফেসবুকের মাধ্যমে গরুটি বিক্রি হয়েছে ৭ লাখ টাকায়। গরুটি কিনেছেন রাজধানী ঢাকার এক শিল্পপতি। প্রতি বছর ঈদ উল আজহাকে কেন্দ্র করে গরু পালন করেন খোরশেদ আলম চঞ্চল। এবারও তিনি ৩৫টি গরু পালন করে কোটি টাকার স্বপ্ন বুনছেন।  খোরশেদ আলম চঞ্চল জানান, শখের বসে ছোট বেলায় দাদার কাছ থেকে গরু কিনে নিয়েছিলেন।  গরু লালন-পালন তার শখের ছিল। সেই ছোটবেলার শখ থেকে উদ্যোক্তা তারপর পুরো ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছেন চঞ্চল। তার প্রতিষ্ঠানের নাম এখন জাহাঙ্গীর এগ্রো। বগুড়া শহরের সাবগ্রাম বাজার এলাকায় প্রায় ৩০ শতক জায়গার ওপর   স্থাপন করেছেন গরুর খামার। তার বাবা জাহাঙ্গীর আলমের বগুড়া শহরের রাজা বাজারে এক্সপোর্ট ইমপোর্টের ব্যবসা রয়েছে। বাবা নেই, বড় ভাই ব্যবসা দেখাশোনা করেন। এখন এলাকার মানুষের কাছে গরুপালন করে বেশি পরিচিতি পেয়েছেন। অনেক বেকার শিক্ষিত যুবক তার কাছে এসে গরুপালনের জন্য বিভিন্ন পরামর্শ নিয়ে নিজেরাও গরু পালন করছে বলে চঞ্চল জানান। তিনি আরো জানান, খামারে এবারে গরুর দাম সাড়ে ৩ লাখ থেকে সাড়ে ৭ লাখ টাকার মধ্যে। এরমধ্যে ভারতের উলবাড়া অঙ্গলা জাতের ৭০০ কেজি ওজনের গরু বিক্রি হয়েছে ৫ লাখ টাকায়, ৭৫০ কেজি ওজনের বিক্রি হয়েছে ৬ লাখ টাকায়, একটি পাকিস্তানি শাহীওয়াল বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৪ লাখ টাকায়, ফ্রিজিয়ান বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৭০০ কেজি ওজনের ৫ লাখ ২০ হাজার টাকায়, ভারতের লম্বা শিংওয়ালা হরিয়ানা বিক্রি হয়েছে ৪ লাখ টাকায়। চঞ্চল আগামীতে বছরে ১০০টি গরু পালনের জন্য চেষ্টা করবেন। এ জন্য নতুন শেড তৈরির জন্য নতুন জায়গা কিনেছেন। তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করার অদম্য ইচ্ছে ছিল। লেখাপড়া শেষ করে সরকারি চাকরির পিছে না ঘুরে নিজেই কর্মসংস্থান গড়ে নিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহমা, ভারতীয় ও পাকিস্তানিসহ নানা প্রজাতির মাংসল এসব গরুর  পেছনে প্রতিদিন চঞ্চলের খরচ হয় প্রায় ২৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা। গরু দেখাশোনা করতে খামারে চঞ্চলের সহযোগী রয়েছেন তিন জন। তিনি ফেসবুকে অনলাইন পেজ খুলে সেখানে কোরবানির গরুর বর্ণনা দিয়ে গরু বিক্রি করেন। হাটে তোলেন কম। অনলাইনে বেশি বিক্রি করেন। এ পর্যন্ত ৩৫টি গরু অনলাইনের মাধ্যমে ঢাকায় বিক্রি করেছেন। এখন তার খামারে আছে ১৫টি বিভিন্ন জাতের গরু। এদিকে বগুড়ায় কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা ৩ লাখ ৪৭০টি আর পালন হয়েছে প্রায় পৌনে ৪ লাখ। বগুড়ার হাটগুলোকে কেন্দ্রে করে মৌসুমি গরুর ব্যাপারিদের আনাগোনা বেড়েছে। গরু ব্যবসায়ীরা গরু এক জেলা থেকে অন্য জেলার হাটে বিক্রি করতে শুরু করেছেন।

সর্বশেষ খবর