শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা
যশোরের রাজনীতি

গ্রুপিংয়ের শেষ নেই আওয়ামী লীগে

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

গ্রুপিংয়ের শেষ নেই আওয়ামী লীগে

যশোর আওয়ামী লীগে বরাবরের মতো এখনো গ্রুপিং আছে। তবে তা তেমন বড় সমস্যা না হলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ স্পষ্টভাবেই দুই গ্রুপে বিভক্ত। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার জেলা আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশের সমর্থন নিয়ে দলের মধ্যে নিজের প্রভাব বজায় রেখেছেন। গতবারের মতো এবারও তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অন্যদিকে বিশিষ্ট শিল্পপতি কাজী নাবিল আহমেদ গতবারের মতো এবারও যশোর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য হয়েছেন। জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর অনেক নেতা-কর্মীই রয়েছেন তার সঙ্গে। সব শেষ উপজেলা নির্বাচনের আগ পর্যন্ত সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ ছিলেন নাবিল আহমেদের সঙ্গে। কিন্তু উপজেলা নির্বাচনে মোহিত কুমার নাথকে সমর্থন না দেওয়ায় তিনি শাহীন চাকলাদারের হাতে ফুল দিয়ে তার গ্রুপে যোগ দেন। গত সংসদ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত গ্রুপগুলোর মধ্যে হানাহানি নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছিল। নির্বাচনের পর অবশ্য এই দুই গ্রুপের মধ্যে তেমন কোনো সহিংসতা বা রেষারেষি দৃশ্যমান হয়নি। তবে কেন্দ্রের অনেক কর্মসূচিই তাদের আলাদাভাবে পালন করতে দেখা গেছে। গত ২৩ জুন যশোর আওয়ামী লীগ তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করে। সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের অনুসারীরা শহরের বকুলতলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে ফুল দিয়ে ও কেক কেটে আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেন। এই অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন, পৌর কাউন্সিলর মুকসিমুল বারীসহ অনেক নেতা-কর্মীই উপস্থিত ছিলেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন চাকলাদারের অনুসারীরা পৃথকভাবে সকালে ও বিকালে অনুষ্ঠান করেন। তাদের অনুষ্ঠানমালায় ছিল বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন, কেক কাটা ও মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা। যদিও এসব অনুষ্ঠানে শাহীন চাকলাদার নিজে উপস্থিত ছিলেন না। ওদিকে একই দিন সকালে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ তার অনুসারীদের নিয়ে আলাদাভাবে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে গিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন ও নিজ কার্যালয়ে কেক কাটেন। সাবেক সংসদ সদস্য খালেদুর রহমান টিটোও নিজ অনুসারীদের নিয়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করে থাকেন। এর আগে গত জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসটিও যশোর আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পালন করে। শহরের দড়াটানা ভৈরব চত্বরে জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে অনুষ্ঠিত স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন দলের সভাপতিম-লীর সদস্য পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য। এ অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। অন্যদিকে আইনজীবী সমিতি মিলনায়তন চত্বরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম।

সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছে। এর পর উপজেলা পর্যায়ে সম্মেলন শেষে জেলার সম্মেলন হবে।

 এসব সম্মেলনের ব্যাপারে এর আগে জেলা আওয়ামী লীগের একটি সভা হয়। এক নেতার মায়ের মৃত্যুর কারণে সভাটি মুলতবি হয়েছিল। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় কর্মসূচি আলাদাভাবে পালনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আসলে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি থাকলে জেলা কমিটি একটা প্রোগ্রাম করে, পৌর কমিটি করে, সদর উপজেলা কমিটি করে। জেলার নেতা ভাগ ভাগ হয়ে এসব কর্মসূচি অংশ নেন। এগুলোকে আসলে ওইভাবে গ্রুপিং বলা যায় না’। কিন্তু জেলা কমিটির কোনো প্রোগ্রামে আপনাকে ও সংসদ সদস্যকে দেখা যায় না, আবার আপনাদের কোনো প্রোগ্রামে দলের সাধারণ সম্পাদককে দেখা যায় না, এগুলো দিয়ে কী বোঝায়?Ñ এমন প্রশ্নের জবাবে শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রুপিং যে একেবারে নেই তা বলা যাবে না। বড় দলে গ্রুপিং কিছুটা থাকবেই। তার পরও নেতাদের মধ্যে এখন দূরত্ব অনেক কমে এসেছে। জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ মিটিং আমরা একসঙ্গেই করেছি।

সর্বশেষ খবর