শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

বরিশাল বিএনপির কোনো আওয়াজ নেই

রাহাত খান, বরিশাল

বরিশাল বিএনপিতে এখন আর তর্জন-গর্জন দেখা যায় না। আগে দলের স্থানীয় কিংবা কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে ভিড় হলেও এখন আর তেমন কর্মী আসছেন না। বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের নিয়ে চলে দলীয় কার্যক্রম। একটা সময় ছিল মহানগর বিএনপির সভাপতি মজিবর রহমান সরোয়ার উপস্থিত থাকলে কর্মসূচিতে উপস্থিতি হাজার ছাড়াত। এখন আর সেই দিন নেই। সরোয়ার থাকুক আর অন্য নেতারা থাকুক বেশির ভাগ সময়ে দলীয় কার্যক্রমে উপস্থিতি শতকের নিচে ঠেকেছে। ১৩ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা নেতা-কর্মীরা পুরনো মামলা

থেকে আত্মরক্ষার চেষ্টা ছাড়াও নতুন ঝামেলার আশঙ্কায় গা বাঁচিয়ে চলছেন। দুর্দিনে নেতাদের অসহযোগিতার কারণেও ঘরে ঢুকে পড়েছেন তৃণমূলের অনেক কর্মী-সমর্থক। অনেকে আবার অস্তিত্ব রক্ষাসহ নানাবিধ সুবিধা পেতে যোগ দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে। ছাত্রদল হয়ে এখন জেলা (দক্ষিণ) যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বলেন, রাজনীতিতে ওইভাবে সক্রিয় নেই আবার আছেন। দেশে কোথাও রাজনীতি নেই। দলেও কার্যক্রম নেই। এই দলের ভবিষ্যৎ কীÑ তা ভেবে পাচ্ছেন না।

বিগত সিটি নির্বাচনের সময় প্যানেল মেয়র ও মহানগর বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা আয়েশা তৌহিদ লুনা, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মহানগর বিএনপি নেতা খাইরুল মামুন শাহিন ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল ইসলামসহ অনেকে যোগ দিয়েছেন আওয়ামী লীগে।

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে স্বাচ্ছন্দ্য পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন প্যানেল মেয়র আয়েশা তৌহিদ লুনা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ অ্যাপ্রেসিয়েট না করলে তিনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন না। বিসিসির কাউন্সিলর বেশির ভাগ আওয়ামী লীগের। তারা ভোট দিয়েছেন বলেই তিনি প্যানেল মেয়র হতে পেরেছেন। তারা গ্রহণ করেছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।

ছাত্রদল এবং পরবর্তীতে ওয়ার্ড বিএনপি থেকে মহানগরীর মূল দলে পদ পেয়ে ২০১৩ সালে একবার কাউন্সিলর নির্বাচিত খাইরুল মামুন শাহিন বলেন, বিএনপির নেতৃত্বের ওপর অবশ্যই ক্ষোভ ছিল। ১৫-২০ বছর ছাত্রদল করার পরও যদি দলে পদ-পদবি কেনা লাগে, তাহলে সেই দল করে কী লাভ? মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর আহ্বানে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। সুযোগ-সুবিধা নিতে আওয়ামী লীগে যাননি, তবে এখানে কদর পাচ্ছেন বলে দাবি করেন বিগত জাতীয় নির্বাচনের সময় বিএনপির হয়ে ৩ মামলার আসামি শাহিন।

বিএনপির বর্তমান দৈন্য চিত্র ফুটে উঠেছে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গত ১৮ জুলাই নগরীর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে। ওই দিন আশানুরূপ লোকসমাগম হয়নি। তৃণমূলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা মুখ ফিরিয়ে নিলেও নেতায় নেতায় দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করেছে বরিশাল বিএনপিতে।

২০১৩ সালের নভেম্বরে এবায়দুল হক চাঁনকে সভাপতি ও আবুল কালাম শাহিনকে সাধারণ সম্পাদক এবং পাঁচজনকে সহ-সভাপতি করে ৭ সদস্যের দক্ষিণ জেলা কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। তিন বছর মেয়াদের কমিটির বয়স ছয় বছর অতিবাহিত হতে চললেও জেলার আওতাধীন পাঁচ থানা ও তিন পৌর কমিটি হালনাগাদ করে কাউন্সিলের মাধ্যমে জেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেননি নেতারা।

সর্বশেষ খবর