শুক্রবার, ৯ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা
স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তদেরও দেওয়া হবে

ঈদে গোশত পাবে ১২ লাখ রোহিঙ্গা

ফারুক তাহের, চট্টগ্রাম

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, বিজিপি ও সেখানকার মগ-মুরংদের হাতে ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের এবার কোরবানি ঈদের গোশত বিতরণ করবে স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন সংস্থা। কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩২টি ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রায় ২ লাখ ১২ হাজার পরিবার কোরবানির এই গোশত পাবে। পরিবারগুলোতে মোট রোহিঙ্গা জনসংখ্যা রয়েছে প্রায় ১২ লাখ। ইতিমধ্যে প্রতিটি পরিবারের মধ্যে কোরবানির গোশত বিতরণ করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোতেও গোশত বিতরণের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন জানান, কোরবানির ঈদে রোহিঙ্গারা যেন কিছুটা হলেও আনন্দ-উচ্ছ্বাস করতে পারে, সে বিবেচনা থেকে এই উদ্যোগ। তবে প্রতিটি পরিবারে কত কেজি করে গোশত বিতরণ করা হবে তা চূড়ান্ত হয়নি। শুধু রোহিঙ্গারা নয়, স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যেও ৩০ ভাগ গোশত বিতরণের নির্দেশনা রয়েছে। ৭০ ভাগ বিতরণ হবে আশ্রিত রোহিঙ্গা পরিবারের মধ্যে। তাই প্রতিটি পরিবার কোরবানির গোশত পাবে। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) আবুল কালাম বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন ব্যক্তি ও এনজিওর মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জন্য গরু পেতে যাচ্ছি। ঘাটতি থাকলে সরকারি উদ্যোগেও গরু কেনা হতে পারে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ক্যাম্প ইনচার্জদের তত্ত্বাবধানে গোশত বণ্টন করা হবে।’ জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, উখিয়া-টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫৭। তবে পরিবার রয়েছে প্রায় ২ লাখ ১২ হাজার। স্থানীয় একটি এনজিও সূত্রে জানা গেছে, তুরস্কভিত্তিক এনজিও ডায়নেট ফাউন্ডেশন ৫০ হাজার কেজি গোশত বিতরণ করবে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। ওই এনজিওর একজন কর্মকর্তা জানান, বিশ্বের ১৬০টি দেশে তারা কোরবানির গোশত বিতরণ করে থাকেন। এবার সর্বোচ্চ পরিমাণ গোশত বিতরণ হবে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গা ও স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে।

উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, থাইংখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোরবানির ঈদে গোশত বিতরণের খবরে তারা বেশ উৎফুল্ল। নিজেদের মধ্যে আনন্দ ভাগাভাগি করে তারাও একজন মুসলমান হিসেবে স্বাচ্ছন্দ্যে কোরবানির ঈদ উদ্্যাপন করতে চান।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে রোহিঙ্গাদের নিজ মাতৃভূমি ছেড়ে পালিয়ে আশ্রয় নিতে হয়েছে বাংলাদেশে। এর আগে আরও দুটি কোরবানির ঈদ এখানেই করতে হয়েছে তাদের। তবে এবারের মতো তালিকা করে কোরবানির গোশত বিতরণের প্রক্রিয়া গেল দুই ঈদে হয়নি। তাই যেটুকু গোশত পাওয়া যাবে তাতেই তারা সন্তুষ্ট থাকবেন বলে প্রত্যাশা প্রশাসনের।

সর্বশেষ খবর