সোমবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা
মৌলভীবাজার

মাঠে সরব আওয়ামী লীগ

সৈয়দ বয়তুল আলী, মৌলভীবাজার

মৌলভীবাজারে বিভক্তির কালো ছায়া কেটে দীর্ঘ এক যুগের পর ২০১৭ সালের ২৮ অক্টোবর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি গঠিত হয়। নেছার আহমদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমানসহ ৭৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি প্রকাশিত হয়। কিন্তু এই নতুন কমিটির নামের তালিকায় বাদ পড়েন দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা। ফলে সে সময় সাংগঠনিক কার্যক্রমে দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মধ্যে কিছুটা ক্ষোভ দেখা দিলেও বর্তমানে মাঠে সরব রয়েছে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগ। শুরু হয়েছে উপজেলাগুলোতে সম্মেলনের কার্যক্রম। এতে সন্তুষ্ট জেলার তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। দলীয় সূত্রে জানা যায়, জেলার ৬টি উপজেলা ও মৌলভীবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। গত ২৮ জুলাই জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সম্মেলন শুরু হবে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে। সদর উপজেলায় ৭ সেপ্টেম্বর, শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ৮ সেপ্টেম্বর, জুড়ী উপজেলায় ১০ সেপ্টেম্বর, মৌলভীবাজার পৌরসভায় ১৪ সেপ্টেম্বর, কমলগঞ্জ উপজেলায় ২০ সেপ্টেম্বর, রাজনগর উপজেলায় ২১  সেপ্টেম্বর ও কুলাউড়া উপজেলায় ২৮ সেপ্টেম্বর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান বলেন, নতুন কমিটি গঠনের পর আমরা দুটি কার্যনির্বাহী ও দুটি বর্ধিত সভা করেছি। বর্তমানে আমাদের জেলা কমিটিতে কোনো বিভক্তি নেই। আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমসহ সব কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। প্রয়াত সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী এবং সাবেক চিফ হুইপ ও জেলা সভাপতি মৌলভীবাজার ৪ আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদের নেতৃত্বে বিভক্ত ছিল দলের নেতা-কর্মীরা। এতে মাঠের রাজনীতির চেয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর নিজেদের মধ্যে কাদা  ছোড়াছুড়িতেই বেশি ব্যস্ত ছিল আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। সাধারণ মানুষের মাঝেও পড়েছিল এর নেতিবাচক প্রভাব। দলীয় সূত্রে জানা যায়, চিফ হুইপ থাকাবস্থায় উপাধ্যক্ষ শহীদই নিয়ন্ত্রণ করতেন আওয়ামী লীগের বড় অংশ ও প্রশাসনকে। জেলাজুড়ে ছিল তার প্রভাব। জেলা সদরের সংসদ সদস্য হয়েও উপেক্ষিত ছিলেন মহসিন আলী। উপাধ্যক্ষ শহীদের দাপটে কোণঠাসা ছিলেন মহসিন আলী গ্রুপের নেতা-কর্মীরাও। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে পাল্টে গিয়েছিল এই চিত্র। সৈয়দ মহসিন আলী মন্ত্রী হওয়ার পর অতীতের দাপট উবে যায় উপাধ্যক্ষ শহীদের। জেলার সর্বত্রে তখন মহসিন আলীর দাপট। এতদিন ঝিম ধরে বসে থাকা তার অনুসারী নেতা-কর্মীরাও তখন  চাঙ্গা হয়ে উঠেছিলেন। জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালের ২৭ অক্টোবর কাউন্সিলে তৎকালীন চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ সভাপতি ও নেছার আহমদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর থেকেই আওয়ামী লীগে বিভক্তি দেখা দেয়। প্রয়াত সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী এবং সাবেক চিফ হুইপ ও জেলা সভাপতি মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদের নেতৃত্বে বিভক্ত ছিল দলের নেতা-কর্মীরা। অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে সে সময়ে ৯ বছরেও জেলার সব নেতা এক টেবিলে বসতে পারেননি। বিভাজনের কারণে কাউন্সিলের পর দুই বছর সময় লাগে কেন্দ্রে পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রেরণে। ২০০৮ সালে জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কমিটির পূর্ণাঙ্গ তালিকা কেন্দ্রে প্রেরণ করেন। উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ কেন্দ্রে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রেরণের পরপরই সৈয়দ মহসিন আলী বলয়ের নেতারাও আরেকটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের জন্য পাঠান কেন্দ্রে। ২০১০ সালে ১৩ সেপ্টেম্বর জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রেরিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্র থেকে অনুমোদন লাভ করেছিল।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর