সোমবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

হালদা দূষণের দায়ে চিটাগং এশিয়ান পেপার মিলস বন্ধের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

বর্জ্য ফেলে হালদা নদী দূষণের দায়ে চিটাগং এশিয়ান পেপার মিলসের উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ অধিদফতর। গতকাল দুপুরে অধিদফতরের চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিক তার কার্যালয়ে শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত দেন। আজাদুর রহমান মল্লিক বলেন, শুনানির পর জরুরি ভিত্তিতে সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ত্রুটি সংশোধন করে ইটিপি সার্বক্ষণিক চালু রাখার পদক্ষেপ গ্রহণ ও পরিবেশসম্মত স্লাগ অপসারণের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এসব ব্যবস্থা গ্রহণ না করা পর্যন্ত কারখানার উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন পয়েন্টে পানির নমুনা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে যে মান-মাত্রা পাওয়া যায় তা পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা, ১৯৯৭ এর মান মাত্রাবহির্ভূত। চিটাগং এশিয়ান পেপার মিলস লিমিটেডের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন চিফ কেমিস্ট মোরশেদ আলম চৌধুরী, জেনারেল ম্যানেজার রঘুনাথ চৌধুরী এবং প্রধান প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মো. শফিউল আলম।

প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমাদের ইটিপি স্থাপনের যে পরিকল্পনা সে অনুযায়ী দ্রুত কাজ শেষ করতে বলেছে পরিবেশ অধিদফতর। ওই কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আপাতত উৎপাদন বন্ধ রাখতে বলেছে।

পরিবেশ অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এর আগে প্রতিষ্ঠানটিকে একাধিকবার জরিমানা আরোপ ও সতর্ক করা হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ১৪ আগস্ট পরিদর্শনে প্রতিষ্ঠানটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খুবই নাজুক পরিলক্ষিত হয়। প্রতিষ্ঠানটির স্লাগ খোলা স্থানে রাখা হয়েছে যা বৃষ্টির পানিতে সহজে ধুয়ে পার্শ্ববর্তী খালে অপসারিত হয়। এই পানি পরবর্তীতে মরাছড়া খাল হয়ে হালদা নদীতে পতিত হয়।

চিটাগং এশিয়ান পেপার মিলস সংলগ্ন ছড়া ও খালে অপরিশোধিত তরল বর্জ্য ছাড়ার খবর পেয়ে ১০ আগস্ট রাতে ঘটনাস্থলে যান হাটহাজারীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন। পরদিন ১১ আগস্ট কারখানাটি পরিদর্শন করেন হালদা গবেষকরা। পরিদর্শনে এশিয়ান পেপার মিল থেকে তরল বর্জ্যরে জলাধারের পাড় ধসে ছড়ায় বর্জ্য ছড়িয়ে পড়া, ইটিপি চালু না থাকা এবং বায়োলজিক্যাল প্ল্যান্টের বর্জ্য সংলগ্ন ছড়ায় উন্মুক্ত করার প্রমাণ মেলে।

এর আগে ৩০ মে হালদা নদীর রাউজান অংশে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার স্থানীয় বাসিন্দা ও সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে এশিয়ান পেপার মিলের বিরুদ্ধে মামলাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর গত ১০ জুনই একই অপরাধে এশিয়ান পেপার মিলকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করে পরিবেশ অধিদফতর। তখন এক মাসের মধ্যেই ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) কার্যকর করার নির্দেশ দেয় অধিদফতর। তবে দুই মাস পার হলেও সে কাজ শেষ হয়নি।

সর্বশেষ খবর