শনিবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

ধরা পড়ছে সেই অপরাধীরা

অপরাধ দমনে সিসি ক্যামেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী মহানগরীতে কয়েকটি অপরাধের ঘটনায় তৎপরতা বেড়েছে পুলিশের। অপরাধ দমনে নতুন কৌশলে দায়িত্ব বণ্টন করা হচ্ছে। নগরীতে রাতের বেলা পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। বেড়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) শীর্ষ কর্মকর্তারাও মাঠ পর্যায়ে তদারকি করছেন। এদিকে, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সিসি ক্যামেরার ওপর বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে আরএমপি। সম্প্রতি নগরীর হেতেমখাঁ এলাকায় কলেজছাত্র খুনের রহস্য উদ্ঘাটন ও ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে সিসি ক্যামেরার ফুটেজের সূত্র ধরে। মণি চত্বর এলাকায় রুয়েট শিক্ষককে লাঞ্ছিত ও তার স্ত্রীকে যৌন হয়রানি ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনও সম্ভব হয়েছে একই সূত্র ধরে।

এরপর রুয়েট ছাত্রী অটোরিকশায় লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগের তদন্তেও গুরুত্ব পাচ্ছে সিসি ক্যামেরা। শিক্ষানগরী খ্যাত রাজশাহীতে কয়েকটি যৌন হেনস্তার ঘটনা বেশ সমালোচিত হয়েছে। এ ছাড়া এ সময়ে কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। পাশাপাশি বখাটেদের উৎপাত নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। অনেক ঘটনা ভুক্তভোগীরা পুলিশকে না জানিয়ে চেপে রাখছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা প্রকাশ করছেন।

গত ৬ জুলাই ভোরে ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফেরার পথে রাজশাহী সিটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ফারদিন আশারিয়া রাব্বিকে কুপিয়ে

হত্যা করা হয়। নেশার টাকার জন্য ছিনতাই করতে গিয়ে না পেয়ে রণক রাব্বিকে হত্যার কথা স্বীকার করে হত্যাকারীরা জবানবন্দি দেয় আদালতে। ১০ আগস্ট সন্ধ্যার পর নগরীর ব্যস্ততম মণি চত্বরে স্ত্রীকে যৌন হয়রানি করায় বাধা দিতে গিয়ে লাঞ্ছিত হন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষক রাশিদুল ইসলাম। রাশিদুল ইসলাম থানায় অভিযোগ না দিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। পুলিশ তার ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে নিজেরা বাদী হয়ে জিডি করে। পরে তাকে থানায় ডেকে সব ঘটনা শোনার পর মামলা করার পরামর্শ দেয় পুলিশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ আগস্ট তার স্ত্রী বাদী হয়ে বোয়ালিয়া থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনা তদন্তে আরএমপির গোয়েন্দা শাখা সিসি ক্যামেরার ফুটেজকে কাজে লাগায় এবং সবাইকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়।

এ ছাড়া নগরীর বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই ও বখাটেদের তৎপরতার খবর পায় পুলিশ। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে নগর পুলিশ তাদের তৎপরতা বাড়িয়েছে।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এসব ঘটনা নিয়ে পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ে একাধিক সভায় যে কোনো মূল্যে অপরাধ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি মহানগরীতে পুলিশের দায়িত্বেও কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়। বাড়ানো হয়েছে সাদা পোশাকে পুলিশি কার্যক্রম।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘রাজশাহীতে সব সময় পুলিশ ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়। এজন্য সবাইকে অনুরোধ করব, যে কোনো ঘটনা হোক না কেন পুলিশকে অবহিত করতে অথবা ঘটনাস্থল থেকে ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা নিতে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে অপরাধ সংঘটনের পরই অপরাধী ধরতে পুলিশ ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি রাজশাহীতে আগের থেকে তুলনামূলক সব নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের পাহারায় তাদের নজরদারিতে মাঠে থাকছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সাদা পোশাকে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। নজরদারি করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। এ ছাড়া নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে।’

নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে অকেজো সিসি টিভি ক্যামেরাগুলো মেরামত করা হচ্ছে। নতুন নতুন পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। যারা ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন পুলিশ তারও তদন্ত করছে। কেউ যদি মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করে বা মানুষকে বিব্রতকর তথ্য দেয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর