সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা
রাজশাহী বিসিক

সুবিধা বাড়েনি চার্জ বেড়েছে

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

সুবিধা বাড়েনি চার্জ বেড়েছে

অবকাঠামোসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত রাজশাহী নগরীর সপুরায় অবস্থিত বিসিক শিল্পনগরী। সেগুলোর সমাধান না করে বিসিক কর্তৃপক্ষ নানা অজুহাতে সার্ভিস চার্জ বাড়িয়ে চলেছে। তার ওপর রাজশাহী সিটি করপোরেশন নতুন করে হোল্ডিং ট্যাক্সের নামে চেয়ে বসেছে দেড় কোটি টাকা। ফলে নানা অজুহাতে প্রতিবছর বাড়তি সার্ভিস চার্জ বৃদ্ধি ও উপযুক্ত পরিবেশ না থাকার কারণে সংশ্লিষ্ট অনেকেই এখানে বিনিয়োগে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

আবদুল মালেক একজন শিল্প উদ্যোক্তা। লেখাপড়া করেছেন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে। তিনি বলেন, পরের হয়ে চাকরি না করে, নিজে শিল্প গড়ে তুলবেন ও অন্যদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবেন; এই আশায় ১৯৭২ সালে রাজশাহীর বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় একটি প্লট নিয়ে টেক্সটাইল মিল গড়ে তোলেন। চায়না থেকে সুতো এনে কাপড় তৈরি করতেন সেখানে। এক সময় রমরমা ছিল তার টেক্সটাইল। তবে নানা প্রতিবন্ধকতায় দেশের অন্যান্য টেক্সটাইলের মতো তারটিও বন্ধ হয়েছে। এখন সেই জায়গায় গড়ে তুলেছেন একটি বেকারি। তিনি জানান, ১৯৫৭ সালে প্রায় ১০০ একর জায়গার ওপর ২০২টি প্লট নিয়ে যাত্রা শুরু করে রাজশাহী বিসিক শিল্পনগরী। উদ্দেশ্য ছিল শিল্পায়নের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া এই রাজশাহী অঞ্চলে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি উন্নয়ন ঘটানো। তবে সময়ের পরিক্রমায় বিসিক কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় সরকারের হঠকারী সিদ্ধান্ত, সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা, উপযুক্ত অবকাঠামোর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের অভাবে এই শিল্পনগরী সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা এখন হারাতে বসেছে তাদের মূল পুঁজি। মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন উৎপাদনমুখী শিল্প থেকে। কারণ হিসেবে এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, এই শিল্পনগরী শুরু হওয়ার পর বিসিক কর্তৃপক্ষ একরপ্রতি (তিন বিঘা) সার্ভিস চার্জ নিত ৫০০ টাকা। সেই সার্ভিস চার্জ এখন বর্গফুটের হিসেবে এসেছে। ২০১৫ সাল থেকে কর্তৃপক্ষ প্লটের মালিকদের কাছ থেকে প্রতি বর্গফুট জায়গার জন্য নিচ্ছে তিন টাকা। অথচ কোনো সার্ভিস দিচ্ছে না তারা। এলাকাটির রাস্তাগুলো ভাঙাচোরা। যানবাহন চলাচলের অযোগ্য প্রায়। ড্রেনগুলোরও বেহাল দশা। ড্রেনের পানি উপচে রাস্তায় জমে। পোলগুলোতে পর্যাপ্ত লাইট না থাকায় রাতে অধিকাংশ রাস্তা অন্ধকার থাকে। পুরো এলাকায় নেই কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট তো আছেই। এমন দুরবস্থায় রাসিক এ বছর এই শিল্প এলাকা থেকে এক কোটি ৫৫ লাখ টাকা হোল্ডিং ট্যাক্স দাবি করছে। অথচ বগুড়ার বিসিক শিল্পনগরীর ব্যবসার কলেবর রাজশাহী থেকে বেশি হওয়া সত্ত্বেও তাদের পৌর কর ধার্য করা হয়েছে মাত্র ১৪ হাজার টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর