সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা
চিকিৎসা নিচ্ছেন রেকর্ড সংখ্যক রোগী

তারপরও দক্ষিণের মানুষের ভরসা বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল

রাহাত খান, বরিশাল

প্রতিষ্ঠার ৪৯ বছরে বর্তমানে সর্বাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন দক্ষিণ বাংলার আধুনিক চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ৫০০ শয্যার অবকাঠামো সুবিধায় শনিবার সর্বাধিক সংখ্যক ১ হাজার ৯৭৯ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। তাই শয্যা ছাড়িয়ে তাদের চিকিৎসা নিতে হচ্ছে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডের মেঝেতে, বারান্দা ও করিডোরে। এদিকে ৫০০ শয্যা হাসপাতালের জনবল কাঠামোতেই চরম সংকট রয়েছে। ২০০৩ সালে হাসপাতালটি ১ হাজার শয্যায় উন্নীত করা হলেও আজ পর্যন্ত নিয়োগ দেওয়া হয়নি প্রয়োজনীয় জনবল।

জানা যায়, ১৯৭০ সালে ৩২৪ শয্যা বিশিষ্ট শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয়। পরে ৫০০ শয্যায় উন্নীত হয়। ৫০০ শয্যা হাসপাতালের জনবল ঘাটতির মধ্যেই ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১ হাজার শয্যায় উন্নীত করার ঘোষণা দেন। অবকাঠামো এবং জনবল না বাড়িয়ে ৫০০ শয্যার হাসপাতালটি ১ হাজার শয্যায় উন্নীত করা হলেও সব সময় রোগী ভর্তি থাকছে ১ হাজার ৭০০ থেকে প্রায় ২ হাজার পর্যন্ত। এ ছাড়া বহিঃবিভাগগুলোতে সরকারি খোলার দিন চিকিৎসা নিচ্ছেন প্রায় ২ হাজার রোগী। এই হাসপাতালে আন্ত ও বহিঃবিভাগ মিলিয়ে ২৮টি বিভাগের ৪৪টি ইউনিট রয়েছে। গত শনিবার হাসপাতালের অন্তঃবিভাগে চিকিৎসাধীন ছিলেন প্রতিষ্ঠার ৪৯ বছরে সর্বাধিক ১ হাজার ৯৭৯ জন রোগী। গতকাল রবিবার চিকিৎসাধীন ছিল ১ হাজার ৯৩০ জন। রোগীর স্থান সংকুলান না হওয়ায় বেশিরভাগ বিভাগে শয্যা ছাড়িয়ে রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন মেঝেতে, বারান্দায় এবং করিডোরে।

৫০০ শয্যার জনবল কাঠামো অনুযায়ী হাসপাতালের চিকিৎসক কর্মকর্তাসহ ২২৪টি পদের বিপরীতে তিন শিফটে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৯৯ জন। এর মধ্যে আন্তঃ বিভাগে ৩৩টি রেজিস্ট্রার পদের মধ্যে ১৮টি শূন্য। ৬৬টি সহকারী রেজিস্ট্রার পদের ৪৮টি, ১০টি অ্যানেসথেসিওলজিস্ট পদের ৪টি, ১০টি ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার পদের ২টি, ২০টি মেডিকেল অফিসার পদের ১৮টি ও ২০টি ইনডোর মেডিকেল অফিসার পদের ১১টি শূন্য রয়েছে।

বহিঃবিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নিচ্ছেন ৩ হাজারের বেশি রোগী। অথচ মেডিকেল অফিসার, সহকারী সার্জন, ডেন্টাল সার্জনের ৪৬টি পদের মধ্যে ২২টি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। প্যাথলজি বিভাগের ৮টি পদের ৩টিই শূন্য। গড়ে প্রতিদিন ৫০০ রোগীর রোগ নির্ণয়ের চাহিদা আছে হাসপাতালে। কিন্তু প্যাথলজি বিভাগের পদগুলো শূন্য থাকায় রোগীদের রোগ নির্ণয়ে পরীক্ষা করাতে হচ্ছে বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে।

চিকিৎসক ও কর্মচারী সংকটসহ শত প্রতিকূলতার মধ্যেও রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন। তিনি বলেন, ৫০০ শয্যার জনবলেই চরম সংকট রয়েছে। সেখানে ১ হাজার শয্যার জনবল কাঠামো এখন পর্যন্ত পাস হয়নি। তিন শিফটে চিকিৎসকরা দায়িত্ব পালন করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের দায়িত্ব পালন করার মতো কোনো বিকল্পও নেই।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর