মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে চোরাচালান

রুহুল আমিন রাসেল

চট্টগ্রামে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে চোরাচালান

চট্টগ্রামে দিন দিন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে চোরাচালান। বিরুদ্ধে চলছে দিন-রাত অভিযান। চট্টগ্রাম বিভাগে এক মাসে চোরাচালানবিরোধী ৬০ হাজার অভিযান চালানো হয়েছে। এতে ১৪১ কোটি টাকার অবৈধ পণ্য আটক হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তবুও থামছে না হেরোইন, গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা, হিলডন বিষ জাতীয় মাদক, অস্ত্র ও বিভিন্ন পণ্য সামগ্রীর চোরাচালান। নতুন করে সীমান্ত এলাকায় কনটেইনার ভর্তি জ্বালানি তেল পাচারের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আর বছরের পর বছর ৫২ হাজার মামলা ঝুলে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় আঞ্চলিক চোরাচালানবিরোধী টাস্কফোর্স।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরে পাঠানো চট্টগ্রাম আঞ্চলিক টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক ও বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান স্বাক্ষরিত টাস্কফোর্স সভার কার্যবিবরণীতে প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। চলতি বছর জুনের চোরাচালান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয় গত ২২ জুলাই। পরে সভার কার্যবিবরণী গত সপ্তাহে পাঠানো হয় এনবিআরে। এতে বলা হয়- জুন মাসে ৬০ হাজার ২টি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ১৪১ কোটি ৫৯ লাখ ৫৫ হাজার ৮৫৭ টাকার পণ্য আটক করা হয়। এই সময়ে ১ হাজার ৬০৮ জন চোরাকারবারিকে আটক করা হয়।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়- চট্টগ্রাম বিভাগে সব ধরনের চোরাচালান মামলার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ১১৭টি। কিন্তু নিষ্পত্তির সংখ্যা মাত্র ৪৬৬টি। ঝুলে থাকা মামলা ৫১ হাজার ৬৫১টি। মামলা ঝুলে থাকার সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। যদিও আদালতে দুই বছরের বেশি সময় চোরাচালানের মামলা ঝুলে না থেকে, সেই জন্যে আগেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সভায় বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান বলেন, চোরাচালানের মামলায় কক্সবাজার, লক্ষ্মীপুর, খাগড়াছড়িতে কেন সাজার পরিমাণ কম এবং চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাঙামাটি ও বান্দরবানে          কেন সাজার পরিমাণ নাই, তা নজরে রাখতে হবে। প্রতিবেদনে জ্বালানি তেল পাচার সম্পর্কে বলা হয়- সীমান্তের শূন্য থেকে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত ফিলিং স্টেশনসমূহের জ্বালানি তেল (ডিজেল) উত্তোলন বেড়েছে। কেবল মাত্র ফেনী ছাড়া চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ডিজেল উত্তোলন বেড়েছে। আমদানি ও উত্তোলন হওয়া ডিজেলসহ অন্যান্য জ্বালানি তেল পাচার হচ্ছে কিনা সেটা নজরদারি করতে হবে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোকে। এ প্রসঙ্গে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, জ্বালানি তেল পাচার রোধে কুমিল্লা, ফেনী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসনকে খুবই সর্তক থাকতে হবে। আখাউড়া সীমান্ত লাইনে রাতে অবস্থানরত ট্রাকগুলো এক্সটা কনটেইনারে জ্বালানি তেল পাচার করার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এখানকার ট্রাকগুলো তল্লাশি করতে হবে। ফিলিং স্টেশনগুলোতে জ্বালানি তেলের যথাযথ মজুদ ও সরবরাহ সঠিক আছে কিনা, সেটাও নজরদারিতে রাখতে হবে।

টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়- ভারতীয় হেরোইন, গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা ট্যাবলেট, বিভিন্ন প্রকার মদ, বিয়ার, ওষুধ, মেন্দাগাছের ছাল, গুঁড়া রং, হিলডন বিষ, তামার তার, করেক্স সিরাপ, ব্যাগপাইপার, শাড়ি, কসমেটিক্স, তৈরি পোশাক, কিটনাশক ইত্যাদি পণ্য সামগ্রীর চোরাচালান বেশি হয়। এসব পণ্য যেন অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে দেশে ঢুকতে না পারে, বিজিবিসহ আইন-প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর