শিরোনাম
সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

যার খুনের বিচার চলছে সে জীবিত

আদালত প্রতিবেদক

রাজধানীর হাজারীবাগ থানায় করা অপহরণ ও খুনের মামলায় বিচারের শেষ পর্যায়ে আদালতকে জানানো হয়েছে ছেলেটি খুন হয়নি। পরিকল্পিতভাবে কিশোর আবু সাঈদকে দিয়ে ঘটনা সাজিয়ে  এ মামলার আসামিদের ফাঁসানো হয়েছে। গতকাল ঢাকার ৫ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ বিষয়ে লিখিত আবেদন করেন আসামি পক্ষের আইনজীবী মো. ওয়াহিদুজ্জামান লিটন। আবেদনে বলা হয়, আবু সাঈদ নামের যে কিশোরকে হত্যা করার অভিযোগ করা হয়েছে, সেই কিশোর বেঁচে আছে। বর্তমানে কিশোর আবু সাঈদ হাজারীবাগ থানার ৫৩(৮)১৯ নম্বর মামলায় গ্রেফতার আছে। তাই আবু সাঈদকে আদালতে হাজির করা হোক। শুনানি শেষে গতকাল এ বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি বিচারক। এর আগে আবু সাঈদ অপহরণ ও হত্যা মামলার আসামি আফজাল হোসেন গত ২৯ আগস্ট রাজধানীর পল্লবী থানায় একটি জিডি করেন। সেখানে তিনি বলেন, আবু সাঈদ নামের যে কিশোরকে হত্যা করার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে, সেই কিশোর বেঁচে আছে। জিডিতে আরও বলা হয়, কথিত খুনের মামলায় এর আগে আবু সাঈদের পরিবার সাড়ে ৫ লাখ টাকা নিয়েছে।

এখন আরও ১ লাখ টাকা দাবি করছে। পরে পুলিশ এসে বাবা-মাসহ আবু সাঈদকে গ্রেফতার করে।

মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, আবু সাঈদের বাবা আজম ২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে হাজারীবাগ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপহরণ মামলা করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ঘটনার দিন তার ছেলে হাজারীবাগের বড় মসজিদ মাতৃপীঠ স্কুলের উদ্দেশে রওনা হয়ে যায়। কিন্তু আর বাসায় ফেরেনি। এর দুই দিন পর হাজারীবাগ থানায় প্রথমে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর এলাকায় প্রচার চালান। ২০-২৫ দিন পর ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে তার মুঠোফোনে ফোন আসে। অপহরণ মামলাটি প্রথমে তদন্ত করে হাজারীবাগ থানার পুলিশ। ২০১৪ সালের ২২ জুলাই পুলিশ আজগর আলী ও মিলন নামের দুই আসামিকে গ্রেফতার করে। পরে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে ডিবির উপ-পরিদর্শক রুহুল আমিন বরিশালের আফজাল হোসেনসহ চারজনকে গ্রেফতার করেন। পরে কিশোর সাঈদকে খুন করার কথা স্বীকার করে আফজাল হোসেন ও সাইফুল ইসলাম হাওলাদার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে বলেছিলেন, আবু সাঈদকে অপহরণের পর লঞ্চ থেকে নদীতে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়। পরে ঘটনার তদন্ত করে ২০১৫ সালের ১৫ জুন আদালতে আসামি আফজাল, তার বোন সোনিয়া আক্তারসহ চারজনের নামে ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মুঠোফোনের কললিস্ট সংগ্রহ করে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের শনাক্ত করা হয়। অপহরণ করার পর ২০১৪ সালের ১৬ এপ্রিল আবু সাঈদকে এমভি অভিযান নামের লঞ্চে নিয়ে আসা হয়। সেদিন রাত সাড়ে ১২টায় আবু সাঈদকে ঘুম থেকে তোলা হয়। এরপর আসামি আফজাল ও সাইফুল মিলে কিশোর আবু সাঈদকে লঞ্চ থেকে ধাক্কা মেরে নদীতে ফেলে  দেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর