জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাড়ে ১৪শ কোটি টাকার অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের বিচারবিভাগীয় তদন্তসহ তিন দফা দাবি ও ছাত্রলীগ কর্তৃক আন্দোলনকারী দুই শিক্ষার্থীকে মারধর করার ঘটনায় দুই দফায় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিপরীতে এক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা দায়ের করায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ফলে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে জাবির ছাত্র-শিক্ষক রাজনেতিক পরিম ল। ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’র ব্যানারে গতকাল বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত আন্দোলনকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতি, পদযাত্রা ও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছেন। এছাড়া দুই আন্দোলনকারীকে ছাত্রলীগের মারধরের প্রতিবাদে পথনাটক ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যৌথ সমাবেশে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘উন্নয়ন প্রকল্পের দুর্নীতির সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে সন্ত্রাস। সন্ত্রাস এবং আধিপত্য যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে এ সমস্যার সমাধান হবে না। আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করা হয়েছে, হামলা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তি আনা যাবে না। এগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং আচার্যের কার্যালয়ের অবহিত থাকার কথা। এসব নিয়ে সারা দেশে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মহাপরিকল্পনা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সম্ভাবনার তৈরি করে। এটি শিক্ষার্থীদের আনন্দের বিষয়। কিন্ত আমরা এর বিপরীত দেখছি। বিশ্ববিদ্যালয় একটি মহাপরিকল্পনার মাধ্যমে তার পূর্ণ চাহিদা পূরণ করতে পারে। কিন্তু আমরা দেখছি উন্নয়নকে ঘিরে অশান্তি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি। যেদিন প্রশাসন মহাপরিকল্পনার চিত্র প্রদর্শন করেছে সেখানে তারা কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেনি। মহাপরিকল্পনার জন্য যে সমীক্ষাগুলো প্রয়োজন, তা কোথায় হয়েছে, কীভাবে হয়েছে তার যৌক্তিক উত্তর তারা দিতে পারেনি। মহাপরিকল্পনার কোনো ছকও তারা দেখাতে পারেনি। তারা বলছেন সময় নেই।
কেন তাড়াতাড়ি করছেন তার একটা প্রমাণ পত্রিকার মাধ্যমে পেয়েছি। কাজ শুরু হওয়ার আগে টাকা ভাগাভাগির খবর প্রকাশিত হয়েছে।’
এদিকে শনিবার এক আন্দোলনকারীকে মারধরের ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অভিষেক মন্ডলের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শাখা ছাত্রলীগ। বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সংগঠনটির সভাপতি জুয়েল রানা বলেন, ‘অভিষেক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র হওয়ায় প্রশাসন আন্দোলনকারীদের চাপে পড়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই প্রশাসন একপাক্ষিকভাবে ছাত্রলীগের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে।’গত ৭ সেপ্টেম্বর সকালে আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম সাইমুমকে মারধর করেন শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অভিষেক মন্ডল। এছাড়া গত ২৭ আগস্ট চলমান আন্দোলনের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সোহায়েব বিন মাসুদকে মারধর করেন এক ছাত্রলীগ কর্মী।