জাতীয় সংসদের রংপুর-৩ সদর আসনে উপনির্বাচনে লড়তে জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পুত্র রাহগীর আল মাহী সাদ এরশাদ ও ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ, আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ ৯ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। গতকাল সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টার মধ্যে তারা এই মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এ সময় লাঙ্গল ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বিশাল শোডাউন নিয়ে খোদ নির্বাচন অফিসের অভ্যন্তরে মিছিল করেছেন। অন্যদিকে দলীয় কোন্দলের কারণে স্থানীয় কোনো নেতা-কর্মী ছিলেন না বিএনপি প্রার্থী রিটা রহমানের সঙ্গে। সব মিলে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে উৎসবের নগরী হয়ে ওঠে রংপুর। রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা জিএম সাহাতাব উদ্দিন জানান, নির্বাচনে অংশ নিতে ১২ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। এর মধ্যে ৯ জন জমা দিয়েছেন। তারা হলেন- জাপার রাহগীর আল মাহী সাদ এরশাদ, আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু, বিএনপির রিটা রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ, বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী কাওছার জামান বাবলা, এনপিপির শফিউল আলম, খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান ম ল রাজু, গণফ্রন্টের কাজী মো. শহীদুল্লাহ ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের একরামুল হক। এদিকে সকাল থেকেই নির্বাচনী কার্যালয়ের আশপাশে ভিড় জমান জাপা নেতা-কর্মীরা। বেলা পৌনে ৩টায় বিশাল শোডাউন নিয়ে সাদ এরশাদ নির্বাচন অফিসে আসেন। এ সময় তার সঙ্গে জাপা মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা নির্বাচন অফিসে ঢুকলেও কর্মকর্তার কক্ষে যাননি। নিচের একটি কক্ষে অপেক্ষা করেন। সাদ এরশাদ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তার মনোনয়নপত্র দাখিল করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘পিতা এরশাদের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করাই তার ব্রত।’ এর আগে সাদ এরশাদ সৈয়দপুর বিমানবন্দর থেকে তার পৈতৃক বাড়ি পল্লী নিবাসে ওঠেন। এ সময় জাপা মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাসহ তিনি এরশাদ ও মাওলানা কারামত আলী জৈনপুরীর কবর জিয়ারত করেন। অন্যদিকে বেলা পৌনে ৪টায় বিশাল শোডাউন নিয়ে নির্বাচন অফিসের নিচতলায় অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু। এ সময় নৌকা নৌকা স্লোগানে পুরো নির্বাচন কার্যালয় এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে। পরে তিনি আওয়ামী লীগ ও সব অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাদের নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকব আমরা। একটি পক্ষ বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এখানে মহাজোটের প্রার্থী হবে। এটি সঠিক নয়। নৌকা থাকবে এবং বিজয়ী হবে।’ এদিকে বিএনপি প্রার্থী রিটা রহমান দলীয় কোন্দলের কবলে পড়েন রংপুর এসেই। ফলে জেলা ও মহানগর বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কোনো স্তরের নেতা-কর্মীই তার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন না। এর আগে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এরশাদের ভাতিজা সাবেক এমপি হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফসহ অন্যরা। আচরণবিধি লঙ্ঘন প্রসঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তা জিএম সাহাতাব উদ্দিন বলেন, আমরা প্রার্থীদের কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছি। মাইকিং চলছে। ৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।
প্রসঙ্গত, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর ১৬ জুলাই আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। রংপুর-৩ আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৪১ হাজার ৬৭৩ জন। এ আসনে ভোট কেন্দ্র ১৩০, ভোটকক্ষ ৯১০টি।
মনোনয়নপত্র জমা দেন বিএনপির প্রার্থী রিটা রহমান -বাংলাদেশ প্রতিদিন
