বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

কঠিন বাধায় দোহাজারী কক্সবাজার রেল প্রকল্প

লাইনের কাজ শেষ হলেও গন্তব্যে যেতে পারবেন না যাত্রীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

কঠিন বাধার মুখে পড়ছে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের কাজ। ঐতিহ্যবাহী কালুরঘাট সেতুর নির্মাণের অগ্রগতি না হওয়ায় কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ শেষেও ট্রেন চলাচল করতে পারবে না। এ অবস্থায় তড়িঘড়ি সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ করছে রেলওয়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের সাবেক এক মহাপরিচালক (ডিজি) বলেন, কালুরঘাট সেতুতে পুরনো সেতু নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে নানা জটিলতা ছিল রেলওয়েতে। শুরুতে অর্থায়ন জটিলতায় আটকে ছিল কয়েক বছর। শেষ পর্যন্ত অর্থায়ন নিশ্চিত হলেও নতুন নির্দেশনায় শুধুমাত্র রেল সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা হয়েছে। ফলে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণ শেষেও ২০২২ সালের মধ্যে কর্ণফুলী নদীর ওপর নতুন রেল সেতু নির্মাণকাজ শেষ হবে না। ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সাবাজার রেল প্রজেক্ট প্রিপারেটরি ফ্যাসিলিটির প্রকল্প পরিচালক মো. সাইদুর রহমান বলেন, ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের এডিবির সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্পটিতে প্রায় ৮টি অংশ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর নতুন করে রেল সেতু নির্মাণেও সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রতিবেদন তৈরি হবে। এরপর অর্থায়নের বিষয়টি নিশ্চিত হলে রেলপথ নির্মাণকাজ শুরু হবে। তবে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন ২০২২       সালের মধ্যে নির্মাণ হয়ে গেলে ট্রেন চলাচল যাতে বিঘিœত না হয় সে বিষয়ে দ্রুততার সঙ্গে সব কাজ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এক সময় এ লাইনে দৈনিক কয়েক জোড়া ট্রেন চলাচল করত। তবে কালুরঘাট সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠার পর ট্রেন সার্ভিস কমিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে দৈনিক ২ জোড়া ট্রেন চলাচল করে। প্রতিটি ট্রেনে পাঁচটি বগি ও একটি পুরনো হালকা ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়। এ রেললাইনে ট্রেনের গতিবেগ ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার হলেও সেতুতে গতিবেগ ১০ কিলোমিটারেরও কম রাখা হয়। এমতাবস্থায় দোহাজারী পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ শেষ হলেও শুধু কালুরঘাট সেতুর কারণে বহু প্রতীক্ষিত এ রুটে ট্রেন চলাচল বিলম্বিত হবে। জানা গেছে, শুরুতে  মেয়াদোত্তীর্ণ কালুরঘাট রেল সেতুর স্থলে নতুন একটি রেলওয়ে কাম রোড ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। ২০১৩ সালে রেলওয়ে কাম রোড সেতু নির্মাণে প্রকল্প তৈরি করে রেলওয়ে। নাম দেওয়া হয় ‘কর্ণফুলীতে কন্সট্রাকশন অব রেলওয়ে কাম রোড ব্রিজ প্রকল্প’। কিন্তু অর্থ সংকটে প্রকল্পটি থমকে ছিল দীর্ঘদিন। শেষ পর্যন্ত সেতুটি নির্মাণে ১ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা অর্থায়নে সম্মত হয় দক্ষিণ কোরিয়ার এক্সিম ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল (ইডিসি)। ২০১৮ সালের শুরুতে এ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই হয়। কিন্তু কাজ শুরুর আগেই চলতি বছরের শুরুতে কালুরঘাট সেতুর স্থলে শুধু রেলের জন্য একটি বিশেষায়িত সেতু নির্মাণের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পরিপ্রেক্ষিতে রেলওয়ে নতুন সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু করে। চলতি বছরের মধ্যে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ করতে পারবে বলে জানিয়েছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। এতেই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে কক্সবাজারে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ট্রেন চলাচল।

সর্বশেষ খবর