রাজশাহীতে প্রতি বছর গড়ে ৯ কোটি টাকা গচ্চা দিতে হচ্ছে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডকে (পিজিসিএল)। নতুন সংযোগ না দেওয়ায় আয় বাড়ছে না। অথচ সংযোগ পেতে সাড়ে তিন বছর ধরে জমা পড়েছে আবেদনের স্তূপ। গ্যাসের অপচয় রোধ করে নতুন সংযোগ দিতে না পারলে পিজিসিএলের পক্ষে এ দূরবস্থা কাটিয়ে ওঠা অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা। পাইপলাইনে গ্যাস থাকলেও গৃহস্থালি ও শিল্পে এর সুবিধা থেকে বঞ্চিত রাজশাহী নগরীর মানুষ। সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন সংযোগ দেওয়া বন্ধ। অথচ এই সময়ের মধ্যে জমা পড়েছে প্রায় সাড়ে ২১ হাজার আবেদন। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর গ্যাস এলেও চাহিদার তুলনায় সুবিধা পেয়েছে খুব কম মানুষই। বর্তমানে বাসাবাড়িতে মাত্র ৯ হাজার ১৫৭টি এবং ১১টি শিল্প-কারখানায় গ্যাস সংযোগ আছে। পিজিসিএল রাজশাহী আঞ্চলিক অফিসের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এ এফ এম আজাদ কামাল জানান, নগরীতে      ২৭০ দশমিক ১৫ কিলোমিটার গ্যাসের পাইপলাইন স্থাপন করেছে পিজিসিএল। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দৈনিক ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের সক্ষমতা থাকলেও মাত্র ৩ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট খরচ হয়। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে নেওয়া ১০৮ কোটি টাকা ঋণের সুদাসল পরিশোধ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতায় প্রতি বছর খরচ হচ্ছে প্রায় ১১ কোটি টাকা। অথচ গ্যাস সংযোগ না বাড়ায় আয় দাঁড়িয়ে আছে মাত্র দুই কোটি টাকাতে। সেই হিসাবে কোম্পানির বছরে ৯ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। বাংলাদেশ রেশম শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি লিয়াকত আলী বলেন, গ্যাসের সংযোগ না দেওয়ায় রাজশাহীতে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটছে না। ১০ হাজারেরও কম আবাসিক শ্রেণিতে গ্যাস দেওয়া হয়েছে। এ থেকে যে আয় হয়, তা দিয়ে পিজিসিএলের স্থানীয় অফিসেরই বেতন-ভাতা ও ব্যয় মেটে না। তাই আরও অন্তত ২৫ হাজার সংযোগ প্রয়োজন। তাহলে হয়তো কোম্পানির আর্থিক ক্ষতি কমে আসবে। রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, জাতীয় সংসদ ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল গ্যাস সংযোগ পুনরায় চালু। কিন্তু এমপি ও মেয়র তা এখনো করতে পারেননি।

গ্যাস না পেলে আবারও রাজশাহীর মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করে দাবি পূরণ করবে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন জানান, গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধ থাকার বিষয়টি তিনি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে জানিয়েছেন। এমনিতে রাজশাহী অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে।