শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা ডাটাবেজ নেই নির্বাচন কমিশনে!

শনাক্ত করা যাচ্ছে না

আয়ুবুল ইসলাম, কক্সবাজার

নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেজে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কোনো তথ্য নেই। ফলে কমিশনের জন্য রোহিঙ্গা শনাক্তকরণ কঠিন হয়ে পড়েছে। দেরিতে হলেও নির্বাচন কমিশনের বোধোদয় হওয়ায় পাসপোর্ট অধিদফতরের কাছ থেকে ডাটাবেজ সংগ্রহ করে এখন ক্রস ম্যাচিংয়ের মাধ্যমে রোহিঙ্গা শনাক্তকরণের দিকেই যাচ্ছে কমিশন। সাম্প্রতিক সময়ে শনাক্তকৃত ৫৯৭ জন রোহিঙ্গা ভোটার খুঁজতেই এ কৌশল নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ পাসপোর্ট অধিদফতর রোহিঙ্গাদের একটি ডাটাবেজ প্রণয়ন করে। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর আসা রোহিঙ্গাদের নিয়ে এ ডাটাবেজ। সাড়ে ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গার যাবতীয় তথ্য রয়েছে এ ডাটাবেজে। দীর্ঘদিন বাংলাদেশ পাসপোর্ট অধিদফতরের এ ডাটাবেজের কোনো ধরনের ব্যবহার ছিল না। সাম্প্রতিক সময়ে এ ডাটাবেজের সূত্র ধরেই পাসপোর্ট প্রদানের ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের শনাক্ত করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সফলতাও পাওয়া গেছে। পাসপোর্টের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে জমা দেওয়া রোহিঙ্গারা ধরা পড়ছে আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে। ডাটাবেজে থাকা আঙ্গুলের ছাপ (ফিঙ্গারপ্রিন্ট) পরীক্ষার মাধ্যমেই এটি সম্ভব হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের কাছে রোহিঙ্গাদের ডাটাবেজ না থাকায় রোহিঙ্গা শনাক্তকরণে নির্বাচন কমিশনের কোনো সফলতা নেই। অধিকাংশ সময় ভোটার হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে জমা দেয় রোহিঙ্গারা। একশ্রেণির জনপ্রতিনিধির অর্থ দিয়েই এ কাজ করে তারা। ফলে খুব সহজেই ভোটার হয়ে এ দেশের নাগরিকত্ব অর্জন করতে পারে। মাঠ পর্যায়ে ভোটার নিবন্ধীকরণ কার্যক্রমে জড়িত থাকা কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শিমুল শর্মা এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, ‘প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিলে আমাদের করার কিছুই থাকে না। রোহিঙ্গারা সহজেই এ দেশের ভোটার হতে পারেন। সাম্প্রতিক সময়ে দেশব্যাপী আলোচিত ৫৯৭ জন রোহিঙ্গা শনাক্তকরণের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। নির্বাচন কমিশনে তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেননি। এ কারণেই নির্বাচন কমিশনের পক্ষে তাদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।’ নাম প্রকাশে অপারগ জানিয়ে এক নির্বাচন কর্মকর্তা এ বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেন। তার ভাষায়, শনাক্তকৃত রোহিঙ্গাদের সবাই চট্টগ্রাম মহানগরের ভাড়া বাসার ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। এ ছাড়া প্রকৃত নাম ও ঠিকানা আড়াল করে ভিন্ন নামেই ভোটার হয়েছিলেন তারা। ফলে তাদের আসল নাম বের করে খুঁজে ধরা খুবই কঠিন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এস এম শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘বহির্গমন ও পাসপোর্ট অফিস কর্তৃক করা ডাটাবেজ নির্বাচন কমিশনে সংযুক্তকরণের কাজ চলমান। পাশাপাশি রোহিঙ্গা শনাক্তকরণে ক্রস ম্যাচিংয়ের কাজও চলছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর