সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
প্লাবিত নিম্নাঞ্চল

বিপদসীমার কাছাকাছি পদ্মার পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

বিপদসীমার কাছাকাছি দিয়ে রাজশাহীর পদ্মা নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল দুপুরে পদ্মার পানি ছিল বিপদসীমার ১১৬ সেন্টিমিটার নিচে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহ ধরেই পদ্মায় পানি হু হু করে বাড়ছে। ফলে রাজশাহীর নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হতে শুরু করেছে। রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের এনামুল হক জানান, এখন যেভাবে পানি বাড়ছে সেটা ফারাক্কার গেট খুলে দেওয়ার কারণে। মনে হচ্ছে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর বেলা ৩টার দিকে গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে ওই রাত থেকেই পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে। সর্বশেষ গতকাল ১২টায় রাজশাহীর বড়কুঠি পয়েন্টে পানির উচ্চতা পাওয়া গেছে ১৭ দশমিক ৩৪ মিটার। এর আগে ভোর ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৩০ মিটার। আর শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় পানি পাওয়া যায় ১৭ দশমিক ২২ মিটার। রাজশাহীতে পদ্মার পানির বিপদসীমা ধরা হয় ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। সে অনুযায়ী পানি এখন বিপদসীমার ১১৬ সেন্টিমিটার নিচে। তবে এখনই রাজশাহীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। বিশেষ করে পদ্মার নদীর ওপারে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চরআষাড়িয়াদহ, পবার চরখিদিরপুর এবং বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। অনেকের বসতবাড়িও প্লাবিত হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী। বন্যার আশঙ্কায় পড়েছেন পদ্মা নদী এ পারের বাসিন্দারা। তিনি বলেন, ১৭ বছরে রাজশাহীতে পদ্মার পানিপ্রবাহ বিপদসীমা অতিক্রম করেছে দুবার। এর মধ্যে ২০০৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত টানা আট বছর রাজশাহীতে পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। ২০০৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে পদ্মার সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ১৮ দশমিক ৮৫ মিটার। এরপর ২০১৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর বিপদসীমা অতিক্রম করে। ওই বছর পদ্মার উচ্চতা ছিল ১৮ দশমিক ৭০ মিটার। এরপর পানি বাড়লেও আর ওই রেকর্ড ভাঙেনি। বর্ষা শেষে এ বছর যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে পানি বিপদসীমা অতিক্রমের আশঙ্কা করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। যোগাযোগ করা হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভুঁইয়া বলেন, ফারাক্কা বাঁধের গেট খোলা রয়েছে। তাই পদ্মার নদী পানি বাড়ছে। বিপদসীমাও অতিক্রম করতে পারে। যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে এ সপ্তাহের শেষ অথবা সামনে সপ্তাহের প্রথম দিকে পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।

পানি বিপদসীমা অতিক্রম করলে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার পর্যাপ্ত প্রস্তুতি থাকার কথা জানিয়েছে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ ছাড়া বন্যার আশঙ্কায় পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুদ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আমিনুল হক। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে প্রতিটি উপজেলায় ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজন হলে আরও পাঠানো হবে।

সর্বশেষ খবর