মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে ভারতের যোগদান নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠান

গৌতম লাহিড়ী, নয়াদিল্লি

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফরে এলে ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে ভারতের যোগদান নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। তখন ২০২১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে দুই দেশের নৌবাহিনীর যৌথ মহড়া করার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হতে পারে। এ সময়ে কয়েকটি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেই যোগদানের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই সময়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি ঢাকা সফর করতে পারেন। সূত্র জানায়, ঢাকায় এক্সিম ব্যাংকের শাখা খোলা ও ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে উপকূলবর্তী রাডার যোগাযোগ নিয়েও সমঝোতা হতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফর নিয়ে কর্মসূচি চূড়ান্ত হবে ২৪ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩ অক্টোবর ঢাকা থেকে দিল্লি আসছেন। তিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম আয়োজিত ইন্ডিয়া ইকোনমিক শীর্ষ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন। ৫ অক্টোবর হায়দরাবাদ হাউসে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে তার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। সেখানেই সমঝোতাপত্রগুলো স্বাক্ষরিত হবে। প্রধানমন্ত্রী মোদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানে ভোজসভা দেবেন। ভোজসভায় ভারতের অন্য মন্ত্রীদের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করসহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা থাকবেন। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করবেন। এবারে তাঁর কর্মসূচিতে সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে সাক্ষাতের কথা থাকলেও দেখা হবে না। প্রণববাবু দুর্গাপূজার কারণে নিজের গ্রামের বাড়ি বীরভূম জেলার কীর্ণাহার গ্রামে থাকবেন। গতবার শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি উপস্থিত ছিলেন। এবার তিনিও দিল্লি আসছেন না। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করবেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী।

এই সাক্ষাৎকারগুলো ৬ অক্টোবর হওয়ার কথা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরদিন ৭ অক্টোবর ঢাকা ফিরবেন। বঙ্গবন্ধুর জীবনের ওপর যে ছবি তৈরি হচ্ছে তার পরিচালক শ্যাম বেনেগাল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন এবং ফিল্ম নির্মাণের সর্বশেষ পরিস্থিতি ওয়াকিবহাল করবেন।

দিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী প্রধানমন্ত্রীর সম্মানার্থে একটি নৈশভোজ আয়োজন করছেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা যে নদীপথে খুলনা থেকে হোসেংগাবাদ গিয়ে পাকিস্তানি নৌবহরে আক্রমণ চালান সেই স্মৃতিতে দুই দেশের নৌবাহিনী প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে একটি নৌবিহার করার পরিকল্পনা করছেন। মোংলা ও চট্টগ্রামে মুক্তিযোদ্ধারা যে জায়গায় পাকিস্তানি নৌবহর আক্রমণ করেছিলেন সেই বিষয়েও একটি যৌথ কর্মসূচি নেওয়া হবে। ভারতের নৌপ্রধান অ্যাডমিরাল কর্মবীর সিং বর্তমানে ঢাকা সফর করছেন। এ বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা।

ভারত সরকার সমুদ্র উপকূল বরাবর রাডার শৃঙ্খল তৈরি করছে। সামুদ্রিক নিরাপত্তার জন্য ইতিমধ্যে প্রতিবেশী দেশ মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা এতে যোগ দিয়েছে। ভারত চায় বাংলাদেশ এতে যোগ দিক। রাষ্ট্রায়ত্ত ভারত ইলেকট্রনিক কোম্পানির এক প্রতিনিধি দল সম্প্রতি ঢাকা সফর করে। এ বিষয়ে চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সফরে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হবে। বিশেষ করে চুক্তি অনুযায়ী মিয়ানমার এখনো রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেনি। কিছুদিন পর মিয়ানমার স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির ভারতে আসার কথা রয়েছে। তখন ভারত এ বিষয়ে আলোচনা করবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

সর্বশেষ খবর