মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ক্যাসিনোকান্ডে জড়িতদের সম্পদের খোঁজে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

যাদের বিরুদ্ধে ক্যাসিনো পরিচালনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে, তাদের সম্পদ অনুসন্ধানের উদ্যোগ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এজন্য দুদকের মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) সাঈদ মাহবুব খানকে তদারক কর্মকর্তা ও পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সভাপতিত্বে গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। দুদকের            জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অবৈধ ক্যাসিনোর মাধ্যমে যারা জ্ঞাত আয়ের উৎসবহির্ভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন মর্মে অভিযোগ রয়েছে, ক্যাসিনো পরিচালনায় জড়িত হিসেবে বিভিন্নভাবে যাদের নাম এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে দুদক অনুসন্ধান করবে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে যুবলীগ নেতাদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণমাধ্যমে খবর আসে, ঢাকায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের তত্ত্বাবধানে ৬০টি ক্যাসিনো চালানো হচ্ছে। ক্যাসিনো চালিয়ে নামে-বেনামে কোটি  কোটি টাকার মালিক হয়েছেন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও কৃষক লীগের অনেকে। পরে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে ধরতে অভিযানে নামে র‌্যাব।

 ১৮ সেপ্টেম্বর গুলশানের বাসা থেকে খালেদকে গ্রেফতার করে ইয়াবা, বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা এবং অবৈধ অস্ত্র পাওয়ার কথা জানায় র‌্যাব।

 একই সঙ্গে ফকিরাপুল ইয়ংমেন্স ক্লাবে অভিযান চালিয়ে ক্যাসিনোর সরঞ্জামের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ মদ জব্দ করা হয়। যুবলীগ নেতা খালেদ ফকিরাপুলের ওই ক্লাবের সভাপতি। গত কয়েকদিনে এমন আরও কিছু ক্লাবে র‌্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো মেলার পাশাপাশি সেগুলো পরিচালনায় যুবলীগ  নেতাদের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ পায়। এদিকে মতিঝিলের ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে অভিযান চালিয়ে রুলেট টেবিল, বোর্ড, বিপুল পরিমাণ কার্ডসহ ক্যাসিনোর সরঞ্জাম উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর গত বুধবার রাতে মনিপুরীপাড়ার বাসা  থেকে পাঁচ বোতল মদসহ ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লোকমান  হোসেন ভূঁইয়া গ্রেফতার হন। ঢাকার ক্লাবগুলোতে অবৈধ ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশের পর যুবলীগ  নেতাদের অনেকে গেছেন আত্মগোপনে। এদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন  চৌধুরী সম্রাট, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দফতর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমান, মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বকুল এবং ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মতিঝিলের ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোমিনুল হক সাঈদ। এ ছাড়া গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও বেরিয়ে এসেছে অনেক ভিআইপি ক্যাসিনো ব্যবসায়ীর নাম। দুদক এদের সবারই সম্পদের অনুসন্ধান করবে বলে জানা গেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর