বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

অসময়ের বৃষ্টিতে ডুবল ঢাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

অসময়ের বৃষ্টিতে ডুবল ঢাকা

টানা বর্ষণে গতকাল ডুবে গেছে রাজধানীর বেশির ভাগ সড়ক। কাকরাইল থেকে তোলা ছবি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

অসময়ের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশ সচিবালয় এবং ঢাকা শহরের অধিকাংশ এলাকা। গতকাল দুপুরে প্রায় দুই ঘণ্টার টানা বর্ষণে নগরীর কোথাও হাঁটুপানি, কোথাও কোমর পানি জমে যায়। আকস্মিক জলজটের কারণে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। অনেক সড়কে পানি জমে থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ি থমকে ছিল। আর প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র তো দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা প্রায় ৬টা পর্যন্ত তলিয়ে ছিল। জলজটের কারণে নগরবাসীকে কয়েক ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় নিজ নিজ কর্মস্থলে। ভোগান্তির শেষ ছিল না। শেষ বিকালে আবার গণপরিবহন              সংকটে নগরবাসীর ঘরে ফেরায় ভোগান্তি ছিল চোখে পড়ার মতো। গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে হঠাৎ তুমুল বৃষ্টি নামে নগরজুড়ে। প্রায় দুই ঘণ্টা স্থায়ী এই বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় সচিবালয়। প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দুর ভিতরে জমে যায় কোথাও হাঁটু সমান আবার কোথাও কোমর সমান পানি। সচিবালয়ের সামনের আবদুল গণি সড়ক, জিরো পয়েন্ট, গুলিস্তান, সচিবালয় লিংক রোড, প্রেস ক্লাব এলাকা, সেগুনবাগিচা, পল্টন, বিজয়নগর, মতিঝিল, মৎস্য ভবন মোড় থেকে কাকরাইল মসজিদ পর্যন্ত সড়ক, নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ঢাকা কলেজ, আরামবাগ, ফকিরাপুল, কমলাপুর, কারওয়ান বাজার, মানিক মিয়া এভিনিউ, বিজয় সরণি, খামারবাড়ি খেজুরবাগান সড়ক, ধানমন্ডি ২৭ নম্বর, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর, মগবাজার, পেয়ারাবাগ, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়াসহ নগরীর আরও অনেক ব্যস্ততম এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। বহু সড়কে হাঁটু সমান পানি জমে যাওয়ায় তীব্র জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। আশ্বিন মাসে এমন অসময়ে হঠাৎ তুমুল বৃষ্টিতে নগরীর বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যাওয়ার কারণে সৃষ্টি হয় যানজট। নগরবাসীর স্বাভাবিক চলাচল বিঘিœত হয়। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি দেখা গেছে সচিবালয়ে। যারা ব্যক্তিগত কাজে সচিবালয়ে ঢুকেছিলেন তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত বের হতে পারেননি। এমনকি যাদের ব্যক্তিগত গাড়ি ছিল তারাও ভোগান্তিতে পড়েন। কারণ পানি এতটাই জমেছিল যে গাড়ি পর্যন্ত চলছিল না। বিকালে অফিস শেষে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও বের হতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন। কারণ বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত পানিতে একাকার ছিল সচিবালয়।  

বিকালে মতিঝিল থেকে যারা প্রেস ক্লাব, মৎস্য ভবন, কাকরাইল, মগবাজার, শাহবাগ, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট হয়ে উত্তরা, মিরপুরের দিকে যাত্রা করেছিলেন তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়িতে বসেই কাটাতে হয়েছে। প্রায় সবকটি সড়কে যানজট লেগে ছিল। আবার রাস্তায় পর্যাপ্ত গণপরিবহন না থাকায় সড়কের পানি ঠেলে বহু লোকককে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওনা করতে দেখা গেছে। বিভিন্ন সড়কে অনেক জায়গায় দেখা গেছে বৃষ্টির পানিতে আটকা পড়ে বহু গাড়ি বিকল হয়ে পড়েছে। এ কারণেও যানজট তীব্র আকার ধারণ করেছিল। অনেক সড়কে পানি জমে যাওয়ায় গর্তে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হন রিকশা ও মোটরসাইকেল আরোহী অনেক যাত্রী। আকস্মিক বৃষ্টিতে নগরীর বিস্তীর্ণ এলাকা ঘণ্টার পর ঘণ্টা তলিয়ে থাকার জন্য নগরবাসী অনেকেই দায়ী করেছেন ঢাকা ওয়াসা, সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও দফতরগুলোকে।

দেখভাল করার দায়িত্বে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের দৃশ্যমান কোনো তৎপরতা ছিল না পানি নিষ্কাশনে। যার ফলে বৃষ্টি শেষ হওয়ার চার ঘণ্টা পরও সচিবালয় ও আরও অনেক এলাকা পানিতে তলিয়ে থাকতে দেখা গেছে।

সর্বশেষ খবর