শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা
‘পিনন হাদি’

কোমর তাঁতে পাহাড়ি নারীর কর্মসংস্থান

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

কোমর তাঁতে পাহাড়ি নারীর কর্মসংস্থান

পার্বত্যাঞ্চলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারীরা কোমর তাঁতে গড়ে তুলেছে কর্মসংস্থান। ঘরে বসে প্রসারিত করেছে নিজেদের বস্ত্রশিল্প ব্যবসা। হাটবাজার আর মার্কেটগুলোতেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এসব বস্ত্র। যা সবার কাছে ‘পিনন হাদি’ নামে বেশ পরিচিত। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারীদের কোমর তাঁতে তৈরি এসব বস্ত্রশিল্প পাহাড়ের গি  পেরিয়ে রপ্তানি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। এসব বস্ত্রের প্রতি আকর্ষণ পর্যটকদের বেশি। চাহিদা অনেক। লাভও বেশি। তাই এ শিল্পের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে পাহাড়ি নারীদের। জানা গেছে, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারীদের প্রধান পোশাক ‘পিনন হাদি’। রেশমি সুতায় তৈরি এসব পিনন-হাদি দেখতে খুব আকর্ষণীয়। শুধু পাহাড়ি নারী নয়, বাঙালি নারীরাও শখের বসে পরিধান করে থাকে এ বিশেষ বস্ত্র। সদর উপজেলার সাবেক জনপ্রতিনিধি পলাশ কুসুম চাকমা জানান, রাঙামাটির রাঙাপনির এলাকার ঘরে ঘরে গড়ে উঠেছে কোমর তাঁতের বস্ত্র শিল্প। অবসর সময়ে কোমর তাঁতে তৈরি করেন  নানা ধরনের বস্ত্র। এ কাজ বেশ কঠিন হলেও  বাণিজ্যিকভাবে তারা সফল। কথা হয় রাঙাপানি এলাকার কোমর তাঁতের বস্ত্রশিল্পী রঞ্জনা চাকমা ও বেলপুদি চাকমার সঙ্গে। তারা বলেছেন, এক জোড়া পিনন হাদি তৈরি করতে প্রায় ১৫ দিন সময় লাগে। নকশা অনুযায়ী বাজার থেকে কিনে আনতে হয় হরেক রঙের রেশমি সুতা। সে সুতা দিয়ে তৈরি করা হয় পিনন হাদি।

কোমর তাঁতি প্রত্যমেলা চাকমা ও শ্যামলি চাকমা জানান, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মধ্যে চাকমা নারীরা যেটা ওপরে উড়নার মতো পরিধান করেন সেটাকে বুক কাপড় আর যেটা নিচে পরিধান করেন সেটাকে থামি বলে। অর্থাৎ চাকমা ভাষায় এটাকে পিনন-হাদি বলে। এ পিনন হাদির বাজারে অনেক চাহিদা রয়েছে। একজোড়া রেশমি সুতার তৈরি পিনন হাদি ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। তবে সুতিরগুলো হাজার ১২শ টাকায় বিক্রি করা হয়। তাই কষ্টের তুলনায় লাভ অনেক। অন্যদিকে পিনন হাদি ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারিভাবে ঋণের সহযোগিতা পাওয়া গেলে এ ব্যবসা আরও ব্যাপকভাবে জমে উঠত। কারণ অনেকে সুতা কেনার অভাবে কাপড় তৈরি করতে পারে না। এ ক্ষুদ্র শিল্পকে কাজে লাগানো গেলে পাহাড়ের বাসিন্দারা অর্থনৈতিকভাবে আরও স্বনির্ভর হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর