রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা
তদন্ত কর্মকর্তার তথ্য

লিজা-সাখাওয়াত দুজনই আত্মহত্যার হুমকি দিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

সাখাওয়াতকে না পেলে আত্মহত্যা করবে বলে প্রায়ই ফোন দিত লিজা। আর সাখাওয়াত ফোনে জানাত লিজা এলে সেও আত্মহত্যা করবে। এমন হুমকি প্রায় আসত চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিন্টু রহমানের কাছে। নাচোল থানায় কর্মরত এই পুলিশ কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। এদিকে লিজার গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার পেছনে      পুলিশের কোনো গাফিলতি আছে কি না, সে সম্পর্কে গঠিত কমিটি শনিবার তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে। তবে রিপোর্ট প্রসঙ্গে নগর পুলিশের পক্ষ থেকে এখনো কিছু বলা হয়নি। তিনি বলেন, ‘গত ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে সাখাওয়াত ফোন দিয়ে বলে- স্যার আমি আত্মহত্যা করব। আমার কিছু ভালো লাগে না।’ তখন মিন্টু রহমান সাখাওয়াতকে বিভিন্নভাবে বোঝান। তার একদিন পর ২৮ সেপ্টেম্বর সকালে আবার লিজা ফোন দিয়ে আত্মহত্যা করবে বলে জানায়। তখনো এই কর্মকর্তা তাকে বোঝান। তিনি থানায় গিয়ে পুলিশকে সব বিষয় খুলে বলতে বলেন। পুলিশ কর্মকর্তা মিন্টু রহমান বলেন, ‘প্রায় এক মাস আগের কথা। রাজশাহীতে না পেয়ে লিজা চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে সাখাওয়াতকে খুঁজতে আসে। বিষয়টি এলাকার মেম্বার আবুল খায়ের বুঝতে পেরে রাত আড়াইটার দিকে পুলিশকে জানায়। পরের দিন পুলিশ সাখাওয়াত ও তার বাবাকে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় লিজা সাখাওয়াতের বাবাকে সালাম করে। পরে সাখাওয়াতের জিম্মায় দেওয়া হয় লিজাকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তবে লিজা একটু রাগী মেজাজের মেয়ে। কোনো কথা বোঝালে বুঝত, কিন্তু একটু পরে নিজের মতোই চলত। তবে দুজনের মধ্যে মিল করে দেওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি।’ পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লিজার মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে স্বামী সাখাওয়াতের পরিবার সম্পর্কে এলাকার কেউ মুখ খুলছে না। এ ছাড়া নাচোল উপজেলার খান্ধুরা গ্রামের বাড়িতে ঝুলছে তালা। লিজার মৃত্যু ও মামলা বিষয়ে জানতে পেরে তারা গা-ঢাকা দিয়েছে।

নগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, লিজার আত্মহত্যার পেছনে পুলিশের কোনো গাফিলতি আছে কি না, সেটি জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে। তবে এ নিয়ে গণমাধ্যমে নগর পুলিশ কমিশনার নিজেই কথা বলবেন।

উল্লেখ্য, গত ২৮ সেপ্টেম্বর গায়ে আগুন দেওয়ার পর রাতে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। শরীরের ৬৩ শতাংশ দগ্ধ হয়ে ঢামেকের বার্ন ইউনিটে কলেজছাত্রী লিজা টানা চার দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে মৃত্যুবরণ করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর