রবিবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

আমি আকাশ থেকে পড়েছি

------------------ ড. মোশাররফ

নিজস্ব প্রতিবেদক

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের যুবলীগের সভাপতি হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশের খবর শুনে আকাশ থেকে পড়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, কী লজ্জা! সমাজের পচন কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে। এটাকে তিনি ‘সমাজ পচনের’ অন্যতম উদাহরণ আখ্যায়িত করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সাহেব যুবলীগের সভাপতির পদ নিতে চান, কারণ- সেখানে হাজার হাজার কোটি টাকা পাবেন। পত্রিকায় দেখলাম-জবি ভিসি মীজানুর রহমান ঘোষণা দিয়েছেন, যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব যদি তাকে দেওয়া হয় তাহলে তিনি ভিসির পদ ছেড়ে দেবেন। গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পরিষদ’র এক সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ছাত্রলীগ নেতাদের এক কোটি ৮০ লাখ টাকা ঈদ বকশিশ দিয়েছেন, তার কাছে কি টাকা তৈরির মেশিন আছে, নাকি গাছ আছে?’ সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। খবরটি পড়ে আমি আকাশ থেকে পড়েছি।

আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম, ছাত্রনেতা ছিলাম, হলের ভিপি ছিলাম, তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার হয়েছি, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, অধ্যাপক, বিভাগীয় চেয়ারম্যান হয়েছি। আমার ছাত্রজীবন থেকে শিক্ষকজীবন পর্যন্ত অনেক ভাইস চ্যান্সেলর দেখেছি। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর কি এমন কথা বলতে পারেন? ভারতের সঙ্গে চুক্তির সমালোচনা করে বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, দেশে জনগণের সরকার থাকলে এভাবে একতরফা চুক্তি করতে পারত না। দুর্বল সরকার বলে তারা এই চুক্তি করেছে। ভারতের সঙ্গে আমরা সুসম্পর্ক চাই, প্রতিবেশী, ভাই-ভাই হিসেবে পাশপাশি থাকতে চাই, সমতার সম্পর্ক চাই- এটাই আমাদের পররাষ্ট্রনীতি। কিন্তু যে চুক্তি করা হয়েছে তাতে শুধু দেওয়া হয়েছে, নেওয়ার কথা হয়নি। তিস্তা চুক্তি নিয়ে কোনো সমাধান নেই, অভিন্ন ৫৪টি নদীতে ভারত বাঁধ দিয়েছে সে নিয়েও কথা হয়নি। ফেনী আমাদের নদী, সেটার পানি মানবিক কারণে ভারতকে দেওয়া হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। অথচ এ চুক্তি করার আগেই ভারত ফেনী নদীতে ৩৫টি পাম্পের মাধ্যমে অবৈধভাবে পানি নিচ্ছে।

তিনি সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়েছে। ৯/১০টি ব্যাংক দেউলিয়া করা হয়েছে। সরকারের লুটের ব্যবসায়ীরা ঋণ নিয়ে তা দিচ্ছে না। তাদের আরও সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনে যারা আছেন তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য একটা মিথ্যা ও সাজানো মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেছেন। রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলকভাবে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। জামিন তার প্রাপ্য অধিকার, অথচ তাকে জামিন দেওয়া হচ্ছে না। কোর্ট নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার।

ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকান্ডে  জড়িতদের যারা লালন-পালন করেছে তাদেরও বিচার হওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, দুর্নীতিবিরোধী অভিযান হলো লোক দেখানো প্রতারণা। যারা ক্যাসিনো পরিচালনা করেছে- তাদের আটক করা হয়েছে। কিন্তু যেসব মন্ত্রী-এমপির প্রশ্রয়ে এসব হয়েছে- সেসব গডফাদারদের গ্রেফতার করা হয়নি।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর