বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

এ যেন পুরো সিনেমার গল্প

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের শ্রীপুরে বাবাকে রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যার পর ট্রিপল নাইনে (৯৯৯) ফোন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আত্মসমর্পণ করেছেন এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের লতিফপুর গ্রামে। নিহত আবদুল ওয়াদুদ ওরফে বাবুল মাস্টার (৫৫) পার্শ্ববর্তী কাপাসিয়া উপজেলার তরগাঁও ইউনিয়নের কোহিনুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক। তিনি ওই গ্রামের সিরাজ ফকিরের ছেলে। এ ঘটনায় ছেলে ইমরান ফকিরকে (২৫) গ্রেফতার করেছে শ্রীপুর থানা পুলিশ। নিহতের বড় ভাই জে এম শামসুল আলম জানান, তার ভাই ওয়াদুদ মাস্টারের এক ছেলে ও এক  মেয়ে। মেয়ের অনেক আগেই বিয়ে হয়েছে। ছেলে ইমরান ফকির বেসরকারি ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিতে ইংরেজিতে অনার্স পড়ছিলেন। বেশ কিছুদিন ধরে ইমরান ফকির মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। গোসিংগা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য খোরশেদ আলম বলেন, ‘ইমরান মানসিক ভারসাম্যহীন। গত প্রায় দেড় বছর ধরে সে বাড়ির পাশের রাস্তায় দাঁড়িয়ে পথচারীদের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ কথাবার্তা ও আচার-আচরণ করে আসছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার জন্য প্রায়ই বাবার কাছে টাকা চেয়ে নিত সে। টাকা দিতে না পারলে মা-বাবার সঙ্গে তার ঝগড়া হতো। সাত মাস আগে দুইবার সে তার মাকে মারধর করে। পরে মা তার বাবার বাড়ি চলে যান। মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় রেখে দাবি অনুযায়ী টাকা দেওয়া থেকে বিরত থাকেন বাবা। এসব বিষয় নিয়ে বাবা-ছেলের মধ্যে একাধিকবার বিবাদ হয়েছে। কিন্তু ইমরান চাহিদা অনুযায়ী টাকা না পেলেই উত্তেজিত হয়ে বাবাকে মারধর করত। বাবা ঘুমানোর আগে কক্ষের পার্টিশন দরজা আটকিয়ে ঘুমাতেন।

 কিন্তু ঘটনার রাতে তিনি সম্ভবত দরজা আটকাননি। বাগ্্বিত-ার এক পর্যায়ে বাবাকে রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে ইমরান। পরে নিজেই ট্রিপল নাইনে ফোন করে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে আহত বাবাকে উদ্ধার এবং ইমরানকে গ্রেফতার করে।’ শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বাবা-ছেলের মধ্যে লেখাপড়ার খরচের টাকা নিয়ে কথাকাটাকাটি হয়। এ সময় ইমরান তার বাবাকে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করেন।

 পরে নিজেই ট্রিপল নাইনে ফোন করে শ্রীপুর থানা পুলিশকে ঘটনা অবহিত করেন তিনি। পুলিশ আহত আবদুল ওয়াদুদ ওরফে বাবুল মাস্টারকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, আবদুল ওয়াদুদ ওরফে বাবুল মাস্টারকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে।

 মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর