শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা
প্রমোট প্রকল্পের নামে প্রতারণা

রাজশাহীর স্কুলে স্কুলে চিঠি দিয়ে ঘুষ দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তার নামে স্কুলগুলোতে চিঠি পাঠিয়ে অবকাঠামো উন্নয়নের প্রলোভন দিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে অর্থ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারক চক্র এ কাজ করছে। তাদের ফাঁদে পা দিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন অনেকেই। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের স্কুলগুলোকে টার্গেট করে হচ্ছে এমন প্রতারণা।

কয়েক দিন আগে হঠাৎই চিঠি আসে রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলার নামি স্কুলগুলোতে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব পরিচয়ে এম আশরাফুল আলম চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে- ‘বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউরোপিয়ান কমিশনের যৌথ উদ্যোগে প্রমোট বিদ্যালয় উন্নয়ন-দ্বিতীয় প্রকল্পের আওতায় বিদ্যালয়ের উন্নয়নে এককালীন অনুদান দেওয়া হবে। এজন্য চিঠি পাওয়া মাত্র মোবাইলফোনে যোগাযোগের জন্যও বলা হয়। চিঠি পাওয়ার পর ফোন করা হলে তা স্বীকারও করেছেন এম আশরাফুল আলম চৌধুরী নামের ওই ব্যক্তি।

স্কুলগুলোতে মেয়েদের কমন রুম নির্মাণের জন্য ৬ লাখ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে জানিয়ে এ টাকা ছাড় করাতে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন ওই ব্যক্তি। নওহাটা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আখতার ফারুক জানান, এই চিঠি হাতে পাওয়ার পর তিনি আশপাশের কয়েকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারাও এ চিঠি পেয়েছেন। চিঠির কথা মতো কেউ কেউ ফোনে উপ-সচিব পরিচয়দানকারী আশরাফুল আলম চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ‘মিষ্টি খাওয়ার’ নামে বিকাশে টাকা পাঠাতে বলেন।

মাসকাটাদীঘি স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আকতার হাসান জানান, চিঠি পেয়ে আশরাফুল আলম চৌধুরীকে ফোন করা হলে তিনি আবদুল্লাহ আল মামুন নামে এক ব্যক্তির মোবাইল নম্বর দিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। একইভাবে আবদুল্লাহ আল মামুন নামের ওই ব্যক্তিও টাকা ছাড়ের জন্য ‘মিষ্টি খাওয়ার’ টাকা দাবি করেন।

পবা উপজেলার কাটাখালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহররম আলী খান বলেন, ‘চিঠিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের লোগোসহ প্রমোট প্রকল্প ও ইউরোপীয়  ইউনিয়নের লোগো ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু চিঠির ফরম্যাট দেখেই আমার সন্দেহ হয়, এটি সরকারি চিঠি নয়।’

শুধু প্রমোট বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন নয়, বিভিন্ন সময়ে নানা লোভনীয় অনুদানের কথা বলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে বিকাশের মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর