শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

একই ডাক্তারের ভুল অপারেশন, আরেক শিশুর মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ায় টনসিল অপারেশন করতে গিয়ে আবারও শিশুর মৃত্যু হলো। ছয় মাসের ব্যবধানে এ নিয়ে একই চিকিৎসকের কাছে টনসিল অপারেশন করাতে গিয়ে দুজনের মৃত্যু হলো। মারা যাওয়া শিশুর বাবা ও তার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, ভুল চিকিৎসায় তাউহিদ হাসানের (৯) মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনার পর আটক দুই চিকিৎসককে জিম্মায় মুক্তি দেওয়া হয়েছে। নিহতের পরিবার ও বগুড়া সদর থানা পুলিশসূত্রে জানা যায়, টনসিল অপারেশনের জন্য তাউহিদকে বৃহস্পতিবার বিকালে তার বাবা শহরের ঠনঠনিয়া এলাকার ‘ডক্টরস ইউনিট-২’ নামের বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করান। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাউহিদকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডা. সাঈদুজ্জামান শিশুটির টনসিল অপারেশন করেন। অপারেশনের পর শিশুটির জ্ঞান আর ফিরে আসেনি। ধারণা করা হচ্ছে, অপারেশন থিয়েটারেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি জানাজানি হলে রাতেই জনতার তোপের মুখে পড়েন চিকিৎসক। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (নাক কান ও গলা ) ডা. সাঈদুজ্জামান ও ডা. নিতাই চন্দ্রকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। নিহত তাউহিদ সারিয়াকান্দি উপজেলার নারচী গ্রামের ফিরোজুল ইসলামের ছেলে।

ফিরোজুল ইসলামের অভিযোগ, অপারেশনের পর মিথ্যা বলে তাউহিদকে অতিরিক্ত সময় অপারেশন থিয়েটারে রাখা হয়, পরে একটি আলাদা রুমে রাখা হয়। সেখানে কাউকে যেতে দেওয়া হয়নি। তাদের জানানো হয় এখন সেখানে যাওয়া যাবে না। কয়েক ঘণ্টা পর জোর করে রুমে ঢুকে তাউহিদের শরীরে হাত দিলে শরীর বরফের মতো হিমশীতল অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় শিশুটির বাবা-মার কান্নাকাটিতে আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। ফিরোজুল ইসলাম সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ করে বলেন, তাদের দাবিকৃত টাকা আগাম পরিশোধের পরও তার সুস্থ ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে। এমনকি ছেলের মৃত্যুর পরও ঘটনা গোপন রাখা হয়।

এর আগে ৮ এপ্রিল অনুরূপ এক ঘটনায় বগুড়া শহরের ‘মালেকা নার্সিং হোমে’ কন্যাশিশু মোসা. হুমাইরা মারা যায়। সেবারও একই চিকিৎসক অপারেশন করেছিলেন। ডাক্তারের ভুল অপারেশনে মৃত্যুর অভিযোগ করে ক্লিনিকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধ লোকজন।

বগুড়া সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রেজাউল ইসলাম রেজা জানান, মৃত ছেলের বাবা এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আটক দুই ডাক্তারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগ না থাকায় দুই ডাক্তারকে জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। শিশুটির লাশ রাতেই ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।

অভিযুক্ত চিকিৎসক সাঈদুজ্জামান বলেন, ‘এনেসথেসিয়ার কারণে শিশুটির মৃত্যু ঘটতে পারে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর