সোমবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

সিলেটে শাহী ঈদগাহের গাছ কেটে গোপনে বিক্রি

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে শাহী ঈদগাহের গাছ কেটে গোপনে বিক্রি

সিলেট নগরীর শাহী ঈদগাহের ভিতর থেকে কেটে ফেলা হয়েছে ২৬টি গাছ। গাছগুলো পিকআপ ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়ার সময় আটক করেছেন স্থানীয় জনতা। ক্রেতা গাছগুলো কিনে নেওয়ার দাবি করলেও জানাতে পারেননি সঠিক বিক্রেতার নাম। শাহী ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সদস্যদের দাবি, তারা গাছগুলো বিক্রি করেননি। গাছগুলো কাটার আগে বনবিভাগেরও অনুমতি নেওয়া হয়নি। জানা যায়, কয়েকদিন ধরে শাহী ঈদগাহ সীমানা প্রাচীরের ভিতরে পশ্চিম দিকের গাছগুলো কাটা শুরু করেন রেজাউল করিম রাজু নামের এক ব্যক্তি। গতকাল দুপুর পর্যন্ত তিনি ২৬টি গাছ কাটেন। পরে পিকআপ ভ্যান দিয়ে গাছগুলো নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় শাহী ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সদস্য মোস্তাক আহমদ ও আবদুল গফুর মাখন মিয়া এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী এনামুল হকসহ এলাকার কয়েকজন গাছগুলো আটক করেন। তখন ক্রেতা রাজু তাদের জানান, তিনি ৯০ হাজার  টাকা দিয়ে গাছগুলো শাহী ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির কাছ থেকে কিনেছেন। গাছ বিক্রির কথা শুনে শাহী ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির উপস্থিত সদস্যরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। তারা গাছ বিক্রির কথা অস্বীকার করেন। এলাকার লোকজন ও শাহী ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সদস্যদের দাবি, কেটে ফেলা ২৬টি গাছের দাম অন্তত ৬-৭ লাখ টাকা। ৯০ হাজার টাকায় গাছ বিক্রির প্রশ্নই ওঠে না। ক্রেতা রাজু কমিটির কাছ থেকে গাছ ক্রয়ের দাবি করলেও কমিটির কার কাছে গাছের টাকা দিয়েছেন তা বলতে পারেননি।

গাছগুলোর ক্রেতা রেজাউল করিম রাজু বলেন, তিনি যাদের কাছ থেকে গাছ কিনেছেন তাদের নাম তিনি জানেন না। তবে কাজীটুলা দিঘীরপাড় এলাকায় একটি অফিসে বসে ১৫-১৬ জন লোকের সঙ্গে দরদাম করে তিনি গাছগুলো কিনেছেন। বিষয়টি ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাশেদ আহমদও জানেন বলে রাজু দাবি করেন।

তবে, রাজুর এ দাবি উড়িয়ে দিয়ে কাউন্সিলর রাশেদ জানান, গাছ বিক্রির ব্যাপারে তার সঙ্গে কোনো আলাপ হয়নি। শাহী ঈদগাহর পশ্চিমের রাস্তা ও ড্রেন সম্প্রসারণের জন্য কয়েকটি গাছ কাটা লাগবে এ কথা জানিয়ে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে শাহী ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। গাছগুলো কাটা বা বিক্রির দায়িত্ব শাহী ঈদগাহ কমিটিরই।

এদিকে, শাহী ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, শাহী ঈদগাহের ভিতরের ছোট্ট পুকুরের মাছ বিক্রি করতে হলেও উন্মুক্ত নিলামের ব্যবস্থা করা হয়। কমিটির পক্ষ থেকে এতোগুলো গাছ বিক্রি করা হলে অবশ্যই তারা জানতেন।

শাহী ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির মোতোয়াল্লি জহির বখত দেশের বাইরে থাকায় এ ব্যাপারে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, শাহী ঈদগাহের পশ্চিমের রাস্তা সম্প্রসারণ ও ড্রেন নির্মাণের জন্য কয়েকটি গাছ কাটার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এ সুযোগে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী মিলে ২৬টি গাছ গোপনে বিক্রি করে দেন। ৯০ হাজার টাকায় গাছ কেনার দাবি করলেও ক্রেতা রাজুর সঙ্গে ওই প্রভাবশালীদের কয়েকজনের গোপন লেনদেন হয়েছে বলেও জানা গেছে। এ খবর পেয়ে গাছগুলো বর্তমানে শাহী ঈদগাহে জব্দ অবস্থায় রেখেছেন এলাকার লোকজন।

সর্বশেষ খবর