রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

‘মেজর গনির বীরত্বগাথা জানে না নতুন প্রজন্ম’

নিজস্ব প্রতিবেদক

মহান মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র ও দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট। এই রেজিমেন্ট না থাকলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন কঠিন হয়ে পড়ত। সারা দেশ থেকে সুঠামদেহী বাঙালি তরুণদের উদ্বুদ্ধ করে এই রেজিমেন্ট গঠন করেন মেজর আবদুল গনি। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের পথ ধরেই পরে জন্ম হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর। অথচ নতুন প্রজন্ম এই ইতিহাস জানেই না। রাষ্ট্রের উচিত মেজর গনির জন্ম ও মৃত্যুদিবস সরকারিভাবে পালনের ব্যবস্থা করে ইতিহাসের এই সমৃদ্ধ অংশটুকু  নতুন প্রজন্মকে জানানো। মেজর গনির ৬৩তম মৃত্যুদিবস উপলক্ষে গতকাল রাজধানীর রাওয়া হেলমেট মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। প্রথমবারের মতো মেজর গনির মৃত্যুদিবসে যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (রাওয়া) ও মেজর গনি পরিষদ। আলোচনায় আনুষ্ঠানিকভাবে মেজর গনির মৃত্যুদিবস পালনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান সাবেক অনেক সেনা কর্মকর্তা। এ সময় মেজর গনির বীরত্বপূর্ণ স্মৃতি ধরে রাখতে মেজর গনির নামে কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসের নামকরণ, মিলিটারি একাডেমিতে ‘মেজর গনি পদক’ চালু, কুর্মিটোলায় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে মেজর গনির নামে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণসহ ১২ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।

রাওয়ার চেয়ারম্যান মেজর (অব.) খন্দকার নুরুল আফসারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন সাবেক তিন সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল (অব.) কে এম শফিউল্লাহ বীরউত্তম, লে. জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, লে. জেনারেল (অব.) নূর উদ্দীন খান; মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, মেজর জেনারেল (অব.) ইমামুজ্জামান বীরবিক্রম, মেজর জেনারেল (অব.) জামিল ডি আহসান বীরপ্রতীক, মেজর জেনারেল (অব.) ফজলুর রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহেদুল আনাম খান, মেজর গনির ভাগ্নে সাংবাদিক শওকত মাহমুদ, সাংবাদিক আবুল কাশেম হৃদয়, মেজর গনি পরিষদের সভাপতি মো. হুমায়ুন কবির, মহাসচিব আনোয়ারুল ইসলাম ভূঁঞা প্রমুখ। মূল প্রবন্ধে মেজর গনির জীবনী, ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট গঠন, ভাষা আন্দোলনে ভূমিকাসহ নানা দিক তুলে ধরেন কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ আবদুল হক। স্বাগত বক্তব্য দেন রাওয়া সেক্রেটারি জেনারেল লে. কর্নেল (অব.) মো. সামসুল ইসলাম।

প্রসঙ্গত, মেজর আবদুল গনি ১৯১৫ সালের ১ ডিসেম্বর কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নাগাইশ গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৭ সালের ১১ নভেম্বর মাত্র ৪২ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বার্লিনের এক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মেজর গনিকে ১৯৮১ সালে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে সরকার।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর