মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

এক নগর দুই মহাপরিকল্পনা

রাজশাহীকে ঘিরে আরডিএ ও সিটি করপোরেশনের পৃথক পরিকল্পনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) নগরীর মহাপরিকল্পনা সংশোধনে খরচ করছে প্রায় ১৯ কোটি টাকা। এটি দেশের শ্রেষ্ঠ মাস্টারপ্ল্যান হবে- এমন দাবি আরডিএর। তবে আলাদা মাস্টারপ্ল্যান করতে এরই মধ্যে চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করেছিল সিটি করপোরেশনও। কিন্তু পরে আর আগ্রহ দেখায়নি চীনা প্রতিষ্ঠানটি।

আরডিএ সূত্রে জানা গেছে, আদর্শ নগরায়ণের জন্য ২০ বছর (২০০৪-২০২৪) মেয়াদি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করে আরডিএ। এর জন্য পদ্মা নদীর চরসহ এর আয়তন নির্ধারণ করা হয় ৩৬৫ বর্গকিলোমিটার। আর চর ছাড়া ৩০০ বর্গকিলোমিটার। পরিকল্পনা গ্রহণের সময় নগরীর মোট আয়তনের ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ জলাশয় ছিল। কর্তৃপক্ষের প্রস্তাব ছিল, পরিবেশ সংরক্ষণ, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ঠিক রাখা ও অগ্নিকা-ের সময় প্রয়োজনীয় পানির উৎসস্থল এবং জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য ৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ জলাশয় (পুকুর) সংরক্ষণ করা হবে। কিন্তু দু-একটি ছাড়া সব পুকুরই ব্যক্তি মালিকানাধীন। আরডিএর মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী এ পুকুরগুলোর শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। আবার তারা নিজেরাও এ পুকুর রক্ষণাবেক্ষণ করছে না। ফলে এ  মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়নি। বিগত ২০ বছরে দ্রুতই হয়েছে নগরায়ন। তাই এ মহাপরিকল্পনাটি রিভিউ করা হচ্ছে আরও ১০ বছরের জন্য। এ জন্য খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১৯ কোটি টাকা। এরই মধ্যে থাইল্যান্ডের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে আরডিএ। কাজও প্রায় দেড় বছর আগে শুরু হয়েছে। অপরদিকে, অন্তত ২৫ বছরের জন্য আলাদা মহাপরিকল্পনা করতে চায় সিটি করপোরেশন। বসবাসের জন্য শান্তিপূর্ণ শহর গড়তে নতুন মহাপরিকল্পনার কথা বলছেন মেয়র। এ জন্য চীনের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকও হয়েছে। তবে আরডিএ মনে করে, একই শহরের জন্য দুটি মহাপরিকল্পনার প্রয়োজন নেই। আরডিএর অথোরাইজড অফিসার আবুল কালাম আাজাদ বলেন, সিটি করপোরেশনের নতুন কোনো পরিকল্পনা থাকলে তা আরডিএকে জানাতে পারে। তাদের প্রস্তাবগুলো আরডিএর সংশোধিত মহাপরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। কিন্তু আলাদা মহাপরিকল্পনার দরকার নেই। সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের বর্ধিত এলাকা নিয়েই আমরা মহাপরিকল্পনা করতে চাই। যানজটমুক্ত বসবাসের জন্য শান্তিপূর্ণ শহর গড়তে এর বিকল্প নেই। কিন্তু আরডিএ সরকারের বিপুল টাকা খরচ করে মাত্র ১০ বছরের জন্য মহাপরিকল্পনা করছে। এর কোনো যৌক্তিকতা নেই। এ জন্য তাদের অন্তত ২৫ বছরের জন্য মহাপরিকল্পনার কথা আমি বলেছি। তারা হয়তো সেটি করবে।’ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক জানান, ‘শিগগিরই সিটি করপোরেশনের পরিধি বাড়বে। তাই সাজানো-গোছানো এই শহরকে নতুন মাত্রা দিতে আমরা নতুন একটি মহাপরিকল্পনার কথা ভেবেছি। এ জন্য চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলাপও হয়েছে। কিন্তু পরে তারা আর এগোয়নি।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর