বুধবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিদেশে নারী শ্রমিক পাঠানো বন্ধের দাবি সংসদে

পিয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ জানালেন মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদেশে নারী শ্রমিক পাঠানো বন্ধের দাবি জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা। এ ছাড়া নারী শ্রমিকদের নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে সংসদে সমালোচনার মুখে পড়েন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে এ নিয়ে মন্ত্রীকে একের পর এক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। দেশের মানসম্মান রক্ষায় সৌদি আরবে নারী শ্রমিক না পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেন এমপিরা। জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আপনারা যতটা চিন্তিত, আমরা তার চেয়ে বেশি চিন্তিত।’ গতকাল জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে বিদেশে নারী শ্রমিক পাঠানো বন্ধের এ দাবি ওঠে। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এ সময় জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু ও কাজী ফিরোজ রশীদ নারী শ্রমিক পাঠানো নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এ ছাড়া এমপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদও সৌদিতে নারী শ্রমিক পাঠানোর বিরোধিতা করেন। সম্পূরক প্রশ্ন করতে গিয়ে তারা এ বিরোধিতা করেন।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘সৌদি আরবে বিশেষ করে নারী গৃহকর্মীদের যৌন নিপীড়নসহ নানা ধরনের নির্যাতন করা হয়। এই অত্যাচারের কারণে অনেক নারীকর্মী সুযোগ পেলেই পালিয়ে যাচ্ছেন, জেলখানায় যাচ্ছেন এবং অনেক কিছু হচ্ছে। সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেন, ‘আমার অনুরোধ থাকবে, দেশের মান-মর্যাদা, ঐতিহ্য রক্ষার্থে নারী শ্রমিক না পাঠিয়ে পুরুষশ্রমিক পাঠান। কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘মন্ত্রী বললেন রিক্রুটিং এজেন্ট বিদেশে লোক পাঠায়। তাহলে ওনাদের দায়িত্বটা কী? জবাবে মন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেন, ‘বিদেশে নারী শ্রমিকরা যে হয়রানির শিকার হন তা মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয় কিছুই জানে না এটা সঠিক নয়। সংসদের বিরোধীদলীয় এমপিদের এ ইস্যুতে বক্তব্য শুনে আমার মনে হয়েছে, অভিযোগ করার জন্য অভিযোগ।

পিয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ জানালেন মন্ত্রী : বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, চাহিদার তুলনায় পিয়াজ কম উৎপাদন ও ভারত রপ্তানি বন্ধ করায় হঠাৎ পিয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে বর্তমানে পিয়াজের বার্ষিক চাহিদা ২৪ লাখ মেট্রিক টন। আর গত বছর পিয়াজ উৎপাদন হয়েছে ২৩ দশমিক ৩০ লাখ মেট্রিক টন। তার মধ্যে ৩০ শতাংশ সংগ্রহকালীন এবং সংরক্ষণকালীন ক্ষতি বাদ দিলে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬ দশমিক ৩১ লাখ মেট্রিক টন। যা   দিয়ে চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়।

গতকাল বিকালে একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চম অধিবেশনে সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য মন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন সংসদকে এ তথ্য জানান। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

মন্ত্রী বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ বিশেষ করে ভারত থেকে প্রতি বছর নির্দিষ্ট পরিমাণ পিয়াজ আমদানি করতে হয়। সম্প্রতি ভারতের মহারাষ্ট্রে বন্যা হওয়ার কারণে পিয়াজের ফলন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এতে তাদের অভ্যন্তরীণ বাজারে পিয়াজ ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এতে তাদের অভ্যন্তরীণ বাজারেও পিয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া ভারত সরকার গত ১৩ সেপ্টেম্বর পিয়াজের সর্বনিম্ন রপ্তানি মূল্য প্রতি টন ৮৫০ ডলার নির্ধারণ করেছে। যা পূর্বে প্রতি মেট্রিক টন ছিল ২৫০-৩০০ ডলার। সে দেশে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পিয়াজের রপ্তানি সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে বাংলাদেশে পিয়াজের দাম বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া বিশ্ব বাজারে রসুনের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়েছে।

তিনি বলেন, পিয়াজ রসুনের দাম ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে প্রতিদিন চারটি করে মোট ২৮টি মনিটরিং টিম ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন বাজারে মূল্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এ ছাড়া টিসিবি’র ডিলারদের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে ঢাকা মহানগরীতে ৩৫টি পয়েন্টে ন্যায্য মূল্যে ট্রাক সেলের মাধ্যমে খোলা বাজারে পিয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়া মিসর ও তুরস্ক হতে পিয়াজ আমদানির জন্য প্রতিষ্ঠিত আমদানিকারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত পিয়াজ আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর