সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

আলোচনায় নেতাদের আমলনামা

১৪ বছর পর সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

আলোচনায় নেতাদের আমলনামা

দরজায় কড়া নাড়ছে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন। আগামী ৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে এই সম্মেলন। ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে পদপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ। ওয়ার্ড কমিটির কাউন্সিলরদের ‘ম্যানেজ’ করার চেষ্টার পাশাপাশি চলছে কেন্দ্রে লবিং। দীর্ঘ ১৪ বছর পর সম্মেলন আয়োজন হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মাঝেও দেখা দিয়েছে উচ্ছ্বাস। সেই সঙ্গে সম্মেলনের মাধ্যমে ৮ বছরের পুরনো শীর্ষ নেতৃত্বে পরিবর্তন আসছে কি-না এ নিয়েও চলছে সিলেটজুড়ে নানা আলোচনা। বিগত সিটি করপোরেশন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং দলীয় কার্যক্রম বিবেচনায় এই আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ এবং শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও সিলেট সিটি করপোরেশনের চারবারের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ। অতীত কর্মকা  বিবেচনায় এবার পদোন্নতি পেতে পারেন এই তিন নেতা- এমনটাই মনে করছেন দলের নেতা-কর্মীরা। আর নেতা-কর্মীদের এই ধারণা বাস্তব রূপ পেলে সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদোন্নতি পেয়ে মহানগর সভাপতির পদে আসীন হতে পারেন আসাদ উদ্দিন আহমদ। আর তার স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন আজাদুর রহমান আজাদ। দীর্ঘদিন থেকে সিলেট বিভাগজুড়ে দলীয় কার্যক্রমে নিজেকে ব্যস্ত রাখার পুরস্কার হিসেবে মহানগর সভাপতি পদ থেকে পদোন্নতি পেয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে দেখা যেতে পারে কামরানকে- এমন আলোচনা চলছে নগরজুড়ে। বর্তমানে সিলেট মহানগরের সভাপতির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সদস্যের দায়িত্ব পালন করছেন কামরান।

পদপ্রত্যাশীদের ‘আমলনামা’ এখন আলোচিত হচ্ছে নেতা-কর্মীদের মুখে মুখে। সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে বিগত সিটি ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এসব পদপ্রত্যাশীর ভূমিকা। গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হন বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। এই নির্বাচনে পরাজয়ের জন্য দলের কয়েকজন নেতার বিতর্কিত ভূমিকাকে দায়ী করা হয়। ওই নির্বাচনে ২০, ২১ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় সমন্বয়কের দায়িত্বে ছিলেন আজাদুর রহমান আজাদ। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অনেক নেতার নিজের কেন্দ্রে নৌকা প্রতীক পরাজিত হলেও এই তিন ওয়ার্ডের সবকটি কেন্দ্রে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন কামরান। একইভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এই তিন ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থী ড. এ কে আবদুল মোমেনের পক্ষে চমক দেখান নেতা-কর্মীদের কাছে ‘ফুল টাইম রাজনীতিবিদ’ হিসেবে পরিচিত আজাদ। তার এই ভূমিকা প্রশংসিত হয় দলের সর্বমহলে। এর আগে আজাদ সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

 নেতা-কর্মীদের ধারণা তৃণমূল থেকে উঠে আসা আজাদ এবার সম্মেলনে পেতে পারেন তার সাংগঠনিক দক্ষতার পুরস্কার। আজাদ ছাড়াও মহানগরের সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচিত হচ্ছে বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, ফয়জুল আনোয়ার আলাওর, সাংগঠনিক সম্পাদক এটিএম হাসান জেবুল ও শফিউল আলম নাদেল এবং বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জগদীশ দাস।

সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদের বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন নেতা-কর্মীরা। বিগত সিটি নির্বাচনেও দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন তিনি। প্রার্থী হওয়ার লক্ষ্যে তিনি চষে বেড়ান পুরোনগরী। ক্লিন ইমেজের অধিকারী এই নেতা দলের বাইরে সাধারণ মানুষের মধ্যেও নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করে নেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলীয় সিদ্ধান্তে সরে দাঁড়ান নির্বাচন থেকে। কাজ করেন দলীয় প্রার্থী কামরানের পক্ষে। তার এই ত্যাগ ও অবদানের ফলস্বরূপ সম্মেলনে পদোন্নতি মিলতে পারে চলছে এমন আলোচনা।

সিটি নির্বাচনে দুবার পরাজিত হলেও থেমে থাকেননি কামরান। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত চষে বেড়িয়েছেন পুরো সিলেট বিভাগ। সম্প্রতি সিলেট বিভাগের বিভিন্ন উপজেলা সম্মেলনেও কামরানের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা আর কর্মতৎপরতার প্রতিদান স্বরূপ মহানগরের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সদস্য পদ থেকে পদোন্নতি পেয়ে তিনি আগামীতে প্রেসিডিয়ামে বা কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদে স্থান করে নিতে পারেন- নেতা-কর্মীদের মাঝে এমন আলোচনা চলছে বেশ জোরেশোরে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর