মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

আনন্দ স্কুলের ভরসা ভুয়া শিক্ষার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

প্রকল্প চালু রাখতে রাজশাহীতে ভুয়া শিক্ষার্থী দিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে আনন্দ স্কুল। সম্প্রতি পিইসি পরীক্ষায় এমন ৫৭ জন ভুয়া শিক্ষার্থী শনাক্তের পর বিষয়টি সামনে এসেছে। অভিভাবকরা বলছেন, টাকার লোভেই বেশিরভাগ শিক্ষার্থী নাম লেখায় আনন্দ স্কুলে। বেআইনি এই কর্মকান্ডের বিস্তারিত তুলে ধরে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠাতে যাচ্ছে স্থানীয় শিক্ষা অফিস।

স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, আট থেকে চৌদ্দ বছরের যেসব শিশু প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করতে পারেনি তাদের জন্যই আনন্দ স্কুল। রিচিং আউট অব স্কুল চিলড্রেন (রস্ক) প্রকল্পের আওতায় সব সিটি করপোরেশন এলাকায় ২০০৫ সালে শুরু হয় এই স্কুলের কার্যক্রম। রাজশাহী মহানগরীতে এই স্কুল আছে ১৩টি। গত রবিবার নগরীর কয়েরদাড়া ও মালদা কলোনি আরবান স্লাম আনন্দ স্কুলের হয়ে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা ৫৭ শিক্ষার্থীকে শনাক্ত করা হয়, যারা অন্য প্রতিষ্ঠানে উঁচু ক্লাসে পড়ে। রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাহফুজা নাসরীন জানান, তিনি গত বৃহস্পতিবারই বিষয়টি টের পেয়ে শিক্ষকদের এ বিষয়ে নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। রবিবার পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর দেখা যায়, একটি মেয়ের প্রবেশপত্রে কোনো ছবি নেই। তাকে বাইরে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করা হলে সে স্বীকার করে যে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। আনন্দ স্কুলে শিক্ষার্থী কম, তাই তাকে ওই স্কুলের পরীক্ষার্থী হিসেবে নিয়ে আসা হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব আজিমা সুলতানা বলেন, যাদের চিহ্নিত করা হয়েছে, তারা সবাই উঁচু শ্রেণিতে পড়ে।

এই ঘটনার পর প্রকাশ্যে এসেছে, কাগজে কলমে থাকলেও রাজশাহীতে বাস্তবে এই প্রকল্পের বেশিরভাগ স্কুলেই শিক্ষার্থী নেই। উপবৃত্তির লোভে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর নাম দিয়েই চলে এদের কার্যক্রম। অভিভাবকরাও স্বীকার করেছেন, টাকার জন্য তারা এই স্কুলে শিক্ষার্থীদের নাম লিখিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক অভিভাবক জানান, প্রকল্পের কর্মীরা এসে তাদের বলেছেন, এখানে নাম লেখালে সুবিধা পাওয়া যাবে। সে জন্যই তারা সন্তানদের এখানে নাম লিখিয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর