মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বাজেটে ৮ দশমিক ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশা

কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের বৈঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী বাজেট হবে আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদের দ্বিতীয় বাজেট। কিন্তু রাজস্ব আদায় থেকে শুরু করে রপ্তানিসহ বেশির ভাগ সূচকই নেতিবাচক। এ অবস্থায় বছরের শেষদিকে রাজস্ব বাড়াতে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) মেশিন বসানোর ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি প্রাথমিকভাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ২৩ শতাংশ। এছাড়া চলতি অর্থবছরের মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ পরিস্থিতি, আমদানিসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন

কাউন্সিলের বৈঠকে এসব আলোচনা হয়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদারসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী। চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআর নিয়ন্ত্রিত করের পরিমাণ ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা থেকে রাজস্ব আদায়ে অনেক পিছিয়ে আছে এনবিআর। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে রাজস্ব আদায় বেড়েছে মাত্র ২ দশমিক ৬ শতাংশ।

তবে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১৭ শতাংশ পিছিয়ে এখনো। অর্থাৎ আবারও বড় ঘাটতির দিকে যাচ্ছে। ঘাটতি কমাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এনবিআরকে নির্দেশনা দেন অর্থমন্ত্রী। সূত্র জানায়, বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান রাজস্ব আদায় বাড়ার বিষয়ে মন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, আগামী মাসে ইএফডি মেশিন বসানো হবে। এতে অবস্থার উন্নতি হবে।

চলতি অর্থবছরের অর্থনীতির অন্য সূচকগুলোর অবস্থাও ভালো নেই। বিশেষ করে রপ্তানি আয়ে বেশ কিছুদিন যাবৎই খারাপ অবস্থা যাচ্ছে। অক্টোবরে ৩০৭ কোটি ৩২ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এটি গত বছরের অক্টোবরের চেয়ে ১৭ দশমিক ১৯ শতাংশ কম। লক্ষ্যের চেয়ে আয় কমেছে প্রায় ১২ শতাংশ।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, রপ্তানি খাতে বিশেষ প্রণোদনা এক শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এতে রপ্তানি খাত আবার আগের জায়গায় ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী আশা করছেন, বছর শেষে সার্বিক অবস্থার উন্নতি হবে। এজন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের দিকনির্দেশনাও দিয়েছেন।

 যদি গ্যাস সংযোগ পাওয়া যেত তাহলে দ্রুত শিল্পায়ন হতো। সেই সঙ্গে কমপক্ষে ৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানও হতো বলে জানান বিসিকের উপ ব্যবস্থাপক মো. আক্রাম হোসেন। তিনি জানান, এখানে একটি শিল্প কারখানা রয়েছে। যেটিতে পাট থেকে জুতা, ব্যাগ ও শোপিচ তৈরি হচ্ছে। আর সেগুলো ফ্রান্সসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে। এখানেও গ্যাসের প্রয়োজন। গ্যাস থাকলে উৎপাদন খরচ কমে আসত। পাশাপাশি এই কারখানায় আরও ৩০০’র মতো মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতো।

কারখানায় কর্মরত সিনিয়র অপারেটর আবু সালেক ও স্ত্রী মিতা আক্তার জানান, তারা আগে ঢাকা এবং কুমিল্লায় কাজ করতেন। এতে করে যা আয় হতো তাই-ই ব্যয় হতো। এখন তারা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই কলমাকান্দা উপজেলা থেকে এসে কাজ করছেন। পাশাপাশি সন্তানদের পড়াশোনাও দেখভাল করতে পারছেন।  

কারখানাটির উদ্যোক্তা কামরুন্নাহার খানম লাকী জানান, তিনি পড়াশোনা করে জীবনে ব্যবসা করবেন বলেই ভাবতেন। পরবর্তীতে যার সঙ্গে বিয়ে হয় কে এম জহির, তিনিও একজন ব্যবসায়ী। এরপর মনে হলো স্বামীর সঙ্গেই পার্টনারশিপে কাজ করার। ২০১৫ সালে তিনি নিজ জেলায় গড়ে তোলেন এই প্রতিষ্ঠান, যা ব্যতিক্রমী। সোনালি আঁশকে কাজে লাগানো হলো। পাশাপাশি এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানও হয়ে গেল। তিনি বর্তমানে এই নবাবী ফুট ওয়্যার লিমিটেডের পরিচালক হিসেবে রয়েছেন। তিনি বলেন, বিশে^র বিভিন্ন শীত প্রধান দেশের অর্ডার আসে তখন তাদের রুচিমতো ডিজাইন দিয়ে তৈরি করে পাঠাই। গত বছর এক কন্টেইনার মাল পাঠানো হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর