শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
সুপারিশ ছিল তদন্ত কমিটির

গ্যাস রাইজার পরীক্ষা করবে কেজিডিসিএল

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) দুর্ঘটনা এড়াতে অবশেষে গ্যাসের রাইজার পরীক্ষা করার উদ্যোগ নিয়েছে। গ্যাস রাইজার পরীক্ষায় শতাধিক প্রকৌশলী ও ৪০ জন মেরামত কর্মীর সমন্বয়ে এলাকাভিত্তিক টিম গঠন করা হয়েছে। কোনো রাইজারের লিকেজ বা কোনো ধরনের সমস্যা পেলে প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ তৎক্ষণাৎ মেরামত করে দেওয়া হবে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তায় এ কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা। উল্লেখ্য, গত ১৭ নভেম্বর নগরের পাথরঘাটা ব্রিকফিল্ড রোডের বড়ুয়া ভবনের নিচতলায় গ্যাস বিস্ফোরণে সাতজন নিহত ও ১০ জন আহত হন। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ত্রুটিপূর্ণ গ্যাস রাইজার পরবর্তী জিআই অংশ থেকে রান্নার জন্য প্রাকৃতিক মিথেন গ্যাস বন্ধ শূন্যস্থানে বিপুল পরিমাণে জমা হয়ে ২ নম্বর কক্ষে প্রথমে প্রবেশ করেছে। সেখানে সকালে পূজার জন্য জ্বালানো ম্যাচের কাঠি থেকে এই বিপুল বিস্ফোরণ হয়েছে, যা মুহূর্তেই ঘরের রাস্তার পাশের দেয়াল ও পুব পাশের দেয়াল উড়িয়ে নিয়ে রাস্তায় ফেলে।’

 এ কমিটি কেজিডিসিএলের আওতাধীন লাইন ও রাইজারগুলো নিয়মিত বিরতিতে পরীক্ষা এবং পরীক্ষার পর ‘গ্যাসের লাইনটি পরীক্ষিত’ একটি সার্টিফিকেট দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ ও গ্যাসলাইন থেকে নিঃসরণ চিহ্নিতকরণে সুপারিশ করে।

কেজিডিসিএল-সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরে বর্তমানে ৫ লাখ ৯৭ হাজার ৯৮৫টি আবাসিক সংযোগ আছে। ২ হাজার ৮০০ কিলোমিটার সরবরাহ লাইন আছে। তা ছাড়া গ্যাস সংযোগের জন্য রাইজার আছে ১ লাখ ৪৫ হাজার। গ্যাসলাইন ও রাইজারগুলো পুরনো বলে অভিযোগ আছে। ফলে এগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। মূল লাইন পরীক্ষা করা হলেও বাসাবাড়ির সংযোগ লাইন পরীক্ষা করা হয় না।

কেজিডিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (প্রকৌশল ও সেবা) মো. সারোয়ার হোসেন বলেন, ‘গত ১ জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে জার্মানির সিডিএম নামে একটি উন্নয়ন সংস্থা নগরের ১ লাখ ৫ হাজার রাইজার পরীক্ষা ও মেরামত করে। ওই সময় লিকেজ থাকা রাইজারগুলো মেরামত করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তবে দুর্ঘটনার পর আবারও গ্যাসের রাইজার পরীক্ষা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই সব রাইজার পরীক্ষা করা হবে। তা ছাড়া বাসায় কী কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে সে ব্যাপারেও নির্দেশনা দেওয়া হবে। রাইজার লিক পেলে বাড়ির মালিকদের নোটিস দেওয়া হবে।’

সিডিএ-সূত্রে জানা যায়, নিরাপদ আবাসন তৈরি করতে ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে চট্টগ্রাম মহানগর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা প্রণীত হয়। পঞ্চাশের দশক থেকে বিধিমালা প্রণয়নের আগ পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরে গড়ে ওঠে প্রায় ১ লাখ ৮২ হাজার ভবন। সিডিএ প্রতি বছর গড়ে আড়াই হাজার নতুন ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর