রবিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

থমকে আছে কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

আইনি জটিলতা না দায়িত্বহীনতা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম বন্দরে কর্ণফুলী নদী রক্ষায় মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হলেও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ থাকায় সবকিছু থমকে আছে। প্রায় ১০ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন আইনি জটিলতার কথা বললেও প্রশ্ন উঠেছে দায়িত্বহীনতা নিয়ে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্যানুযায়ী, নদীদূষণ, দখল রোধ ও নাব্য বৃদ্ধিতে এক বছর মেয়াদের ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’, তিন বছরের ‘স্বল্পমেয়াদি’, পাঁচ বছরের ‘মধ্যমেয়াদি’ এবং ১০ বছরের ‘দীর্ঘমেয়াদি’ মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রের তথ্যানুযায়ী, গত ৪ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম ধাপের টানা পাঁচ দিনের অভিযানে ২৩০টি স্থাপনা উচ্ছেদ ও প্রায় ১০ একর ভূমি উদ্ধার করা হয়। আলোর মুখ দেখে পাঁচটি খালের মুখ। বন্দর এলাকা থেকে শুরু করে বারিক বিল্ডিং মোড়-গোসাইলডাঙ্গা-সদরঘাট-মাঝির ঘাট-শাহ আমানত সেতু হয়ে মোহরা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার নদীর তীরকে তিন ভাগে ভাগ করে শুরু হয় অভিযান। প্রথম ধাপে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয় নগরের সদরঘাট থেকে বারিক বিল্ডিং মোড় পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার অংশে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম ধাপের অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। তখন থেকে থমকে রয়েছে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ। অভিযোগ রয়েছে, আগের অভিযানে লবণ  মিলসহ ছোট ছোট অনেক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও বড় কিছু স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়নি। সরেজমিন দেখা গেছে, উচ্ছেদকৃত স্থানগুলো এখন ব্যবহার হচ্ছে ট্রাক-লরি ও পণ্য লোড-আনলোডের ঘাট হিসেবে। তা ছাড়া এসব এলাকায় তৈরি হয়েছে ছোট ছোট টংয়ের দোকান। উচ্ছেদকৃত স্থানে রাখা হয়েছে লবণ, মসুর ডালের বস্তাসহ ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন পণ্য। আনু মাঝির ঘাট, মাঝির ঘাট, আদমঘাট, লবণঘাট, বিবি মসজিদ লেন, বারিক বল্ডিং মোড়ের ঘাট, সদরঘাট লাইটারেজ জেটিঘাট, কর্ণফুলী ঘাটসহ উচ্ছেদকৃত স্থানসমূহে অভিন্ন অবস্থা। তা ছাড়া উচ্ছেদের সময় জেলা প্রশাসনের পক্ষে দেওয়া লাল রঙের নিষেধাজ্ঞা সাইনবোর্ডটি কয়েক স্থানে দেখা যায়নি। সব মিলিয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দায়িত্বহীনতার অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীসহ সব নদীতীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ নিয়ে সরকার বদ্ধপরিকর। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ গ্রহণ চলমান আছে। তবে কর্ণফুলীর ব্যাপারে আইনি কিছু জটিলতাও আছে। তাই এসব নিরসন করে উচ্ছেদ শুরু হবে।’ তিনি বলেন, ‘উচ্ছেদকৃত স্থান যাতে আবারও কেউ বেদখল করতে না পারে, এজন্য সেখানে লাল কালি দিয়ে মার্কিং ও দাগ দেওয়া আছে।’

সর্বশেষ খবর