চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে লড়ছেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ মোরশেদ খান। ইতিমধ্যে তিনি তার প্রতিনিধির মাধ্যমে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। আজ শেষ দিনে তিনি চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম জমা দেবেন বলে জানা গেছে। প্রবীণ এই রাজনীতিক দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি অংশ নেননি। মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় মনোনয়ন বঞ্চিত হন। বিএনপির হয়ে তার নির্বাচনী আসন চট্টগ্রাম-৮ থেকে গতবার লড়েছেন নগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান। মোরশেদ খান দীর্ঘদিন বিএনপির বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ তিনি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। বিএনপি সরকারের সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্প্রতি বিএনপি থেকে আকস্মিকভাবে পদত্যাগ করেন। এতে রাজনীতির মাঠে শুরু হয় নতুন হিসাব-নিকাশ। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন মোরশেদ খান- এমন গুঞ্জন ওঠে। কিন্তু এখন পর্যন্ত দক্ষ ও কৌশলী এই রাজনীতিবিদ কোনো দলে যোগ দেননি। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিনকে আর বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে নগর বিএনপির সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ানকে। আর জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলুকে। গেল নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক দল হিসেবে জাসদ (ইনু) কেন্দ্রীয় কার্যকরী সভাপতি হিসেবে মঈন উদ্দীন খান বাদল নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে জয়লাভ করেন। এর আগে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনিই নির্বাচিত হয়েছিলেন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে চট্টগ্রামের এ আসন থেকে অতীতে কয়েকবার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন মোরশেদ খান। এ আসনের আসন্ন উপনির্বাচনে নিজের নির্বাচনী এলাকা হিসেবে মোরশেদ খান স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করলে এখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। পাল্টে যেতে পারে নির্বাচনী হিসাব-নিকাশ।
তাই মোরশেদ খানের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের খবরটি বিএনপির জন্য দুশ্চিন্তার বিষয় বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। কারণ আবু সুফিয়ান বিএনপির প্রার্থী হলেও তার বাড়ি বোয়ালখালী নয়, চকরিয়ায়। অন্যদিকে জিয়া উদ্দিন বাবলুর বাড়িও রাউজানে। ফলে স্থানীয়রা নিজ এলাকার প্রার্থীকে বাদ দিয়ে ওই এলাকায় বহিরাগত প্রার্থীদের কতটুকু মূল্যায়ন করবেন তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোসলেম উদ্দিনের বাড়ি বা জন্মস্থান বোয়ালখালী হলেও এর আগে পটিয়া আসন থেকে দু-দুবার নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন। কিন্তু মোরশেদ খানের জন্মস্থান বোয়ালখালী হওয়ায় এবং এলাকার সন্তান হিসেবে তার জয়লাভের সম্ভাবনার কথাই ভাবছেন স্থানীয়রা। ফলে আসনটিতে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চললেও একটি পূর্ণাঙ্গ নির্বাচনের আবহ তৈরি হয়েছে।