বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
লোভনীয় চাকরির অফার সংঘবদ্ধ চক্রের

প্রতারণায় স্বপ্ন ভঙ্গ শত শত যুবকের

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

ওরা তিনজন। একসময় ছিলেন নেহাত নিম্ন আয়ের মানুষ। বছর কয়েক আগে তোফাজ্জল হোসেনের মাথায় আসে টাকা কামানোর অভিনব এক পন্থা। অল্প সময়ের মধ্যে কোটিপতি হওয়ার জন্য একেকজন বনে যান সরকারি ‘উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা’। লোভনীয় চাকরি দেওয়ার কথা বলে সাধারণ লোকজন থেকে হাতিয়ে নিতে থাকেন কোটি কোটি টাকা। চাকরি না হওয়ায় ভাঙতে থাকে শত শত যুবকের স্বপ্ন। এভাবেই এদের হাতে সর্বস্বান্ত হয়েছেন শত শত যুবক। অবশেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর হাতে পাকড়াও হয়েছে এ প্রতারক চক্র। তারা হলেন তোফাজ্জল হোসেন, আনোয়ারুল হোসেন প্রকাশ আতিক ও রিপন সিকদার। গত চার দিন ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো। অভিযানের নেতৃত্বে থাকা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক সন্তোষ চাকমা বলেন, ‘প্রতারক চক্রটি গত কয়েক বছরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস, চট্টগ্রাম বন্দর, সেনাবাহিনী ও এনবিআরে চাকরি দেওয়ার কথা বলে শত শত যুবকের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। দীর্ঘ তদন্ত করে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ভুয়া নিয়োগপত্র, প্রবেশপত্র, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র, পেনড্রাইভসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।’ জানা যায়, এ চক্রটি ২০১৫ সালে চাকরি দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রতারণা শুরু করে। তারা চাকরিপ্রত্যাশীদের খুঁজে বের করে প্রতারণার ফাঁদ বোনেন।

 এরপর নিজেরাই বিভিন্ন পদের জন্য প্রবেশপত্র, প্রশ্নপত্র, উত্তরপত্র, পুলিশ ভেরিফিকেশন, নিয়োগপত্র তৈরি করে নিয়োগ প্রার্থীদের হোটেলে এনে কথিত পরীক্ষা নেন। পরীক্ষার পর পরিচয় করিয়ে দেন প্রতারক চক্রের অন্য সদস্য কথিত উচ্চপদস্থ প্রভাবশালী কর্মকর্তার সঙ্গে। একপর্যায়ে একেকজন নিয়োগ প্রার্থীর কাছ থেকে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ধরিয়ে দেন ভুয়া নিয়োগপত্র। টাকা পাওয়ার পরই মোবাইল বন্ধ রেখে আত্মগোপনে চলে যায় চক্রটি। এরই মধ্যে কয়েক শ ব্যক্তির কাছ থেকে অভিন্ন কায়দায় প্রতারণা করে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে কয়েক কোটি টাকা। তবে পিবিআইর জিজ্ঞাসাবাদে ২৩ জনকে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের নিয়োগপত্র, ২০ জনকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, ২১ জনকে নিয়োগপত্র, চট্টগ্রাম বন্দরে একজনের নামে নিয়োগপত্র ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, এনবিআরে ২৭ জনের নামে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর